ভারতে এখনও ৭০ কোটি মানুষ প্রকাশ্য স্থানে বা অনিরাপদ টয়লেট ব্যবহার করে মলমূত্র ত্যাগ করে। তবে প্রতিবেশী বাংলাদেশে এই চর্চা প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে।
বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে ওয়াটারএইড নামে একটি সংস্থা প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মৌলিক টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যদিও গত কয়েক বছরে কিছু উন্নতি হয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। নেপালে প্রকাশ্যে মলত্যাগ ২০০০ সালের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বিশ্বজুড়ে প্রতি তিনজন মানুষের একজনের জন্য এখনও ভালো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। মেয়েদের জন্য টয়লেটের অভাব আরও বড় সমস্যা, বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময়। ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আফ্রিকায় প্রতি ১০ জনের একজন মেয়ে ঋতুস্রাব চলাকালীন স্কুলে যায় না।
ভারতে টয়লেটের অভাবের কারণে ধর্ষণসহ নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। ২০১৪ সালে প্রকাশ্য স্থানে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে এমন ঘটনাও সামনে এসেছে। ভারতে ৩৫ কোটি নারী এবং ইথিওপিয়ায় ৪ কোটি ৬০ লাখ নারী নিরাপদ টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টয়লেটের অভাব শুধু স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়, এটি নারীদের বাইরে চলাচল সীমিত করার একটি কারণও। ভিক্টোরিয়ান যুগের ইংল্যান্ডে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাওয়া নিরুৎসাহিত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের জন্য টয়লেট তৈরি করা হতো না।
ড. ক্লারা গ্রিডের মতে, সেই সময় অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিনোদনকেন্দ্রগুলো কেবল পুরুষদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে নির্মাণ করা হতো। ফলে নারীরা কম পানি পান করা, প্রস্রাব আটকে রাখা, বা ঘরের বাইরে কম সময় কাটানোর মতো পদ্ধতিতে টয়লেটের অভাব মানিয়ে নিতে বাধ্য হতেন।
উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে নারীদের ভোটাধিকারের আন্দোলন, ডিপার্টমেন্ট স্টোর ও ক্যাফের জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে নারীদের টয়লেট ব্যবহারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে শুরু করে।
বর্তমানে টয়লেটের অভাবের এই সমস্যার সমাধান জরুরি। এটি শুধু স্বাস্থ্য নয়, নারীর সম্মান, নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার বিষয়েও গভীর প্রভাব ফেলে।
এসআর
মন্তব্য করুন: