news.protidinerbangla22@gmail.com বৃহঃস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৪ আশ্বিন ১৪৩১

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে ডিডি খালেকের রমরমা এমপিও বাণিজ্য

সাইদুর রহমান

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৪ ১২:২৭ এএম

প্রতি এমপিওতে নিয়েছেন ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ  টাকা।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক এস.এম. আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে সহস্রাধিক এমপিও করানোর অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা আঞ্চলিক কমিটির দুজন সদস্যকে বাদ দিয়ে অবৈধভাবে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে তিনি একাই এ এমপিওভুক্তি করান। 

একেকটি প্রতিষ্ঠানে ১০ হতে ১৫ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভুক্তি করানো হয়। যাদের প্রত্যেকের কাছ ঘুষ নিয়েছেন গড়ে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।

আর এ টাকা সংগ্রহ করতে শিক্ষক কর্মচারীদের ডেকে নিতেন রাজধানীর ল্যাবএইড, পপুলার ও আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের বিভিন্ন গোপন কক্ষে।

নিয়ম অনুযায়ী, সেবা প্রত্যাশীরা ঢাকার আঞ্চলিক অফিসে দেখা করার কথা কিন্তু তাদের ডেকে পাঠাতেন হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই এই ঘটনার সত্যতা মিলবে। সব মিলিয়ে সহস্রাধিক এমপিও করাতে গিয়ে তিনি প্রায় কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


মাউশির উপ পরিচালক (মাধ্যমিক) আবদুল আজিজ বলেন , কোন অবস্থাতেই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করার সুযোগ নেই। আঞ্চলিক কমিটির ৩ জন সদস্য ছাড়া একা এমপিওভুক্তির কাজ সম্পন্ন করার কোন সুযোগ নেই। কেউ করে থাকলে তা আইনের ব্যাতয় ঘটেছে।

রাজধানীর স্বনামধণ্য একটি স্কুলের একজন শিক্ষিকা এমপিওভুক্তির আবেদন করেছিলেন। তার সকল কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও টাকা না দেয়ায় স্কুল শাখায় এমপিওভুক্তি হয়নি।  


অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডিডি আব্দুল খালেক মাউশির অসাধু গুটিকয়েক কর্মকর্তা -কর্মচারীদের অনৈতিক সুযোগ সুবিধা দেন। ফলে তিনি কাউকেই তোয়াক্কা করেন না। শিক্ষা প্রশাসনে সবাই তাকে ম্যানেজ খালেক বলেই চিনেন।


জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে এমপিও কার্যক্রমকে সারাদেশে ৯টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। কিন্তু এমপিও প্রত্যাশীদের নির্ধারিত হারে অর্থ প্রদান করতে হয়। অথবা প্রভাবশালীদের স্মরনাপন্ন হতে হয়।

এই দুটির কোনটি আশ্রয় না নিলে মাসের পর মাস বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। কখনো আবার নানা ত্র“টি ধরে আবেদন ফিরিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি কলেজ ৩) স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০০২.০০৫.২০২১-৩৬৬, তারিখ ৩০/১০/২০২২ খ্রি: এর আলোকে মাউশির সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী (মাধ্যমিক ২) স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে (যার স্মারক-৩৭.০২.০০০০.১০৭.৩১.৬৯২.২০২২-৩২১৯, তারিখ ৩০/১০/২০২২ খ্রি.) এমপিওভুক্তির উপজেলা/থানা পর্যায়ের কমিটি, জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং সারাদেশের ৯ টি অঞ্চলের কমিটি গঠন করা হয়।

এতে ঢাকা অঞ্চলের গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং অঞ্চলে অবস্থিত জেলা শহরের/বিভাগীয় শহরের প্রাচীনতম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমপিওভুক্তির কমিটিতে থাকবেন।

কিন্তু ডিডি খালেক একাই এমপিওর কাজ সম্পন্ন করেন। গবর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন তালুকদারকে কমিটি বিষয়ে জানতে চাইল তিনি বলেন, আমি এরকম কোন কমিটিতে আছি বলে কেউ আমাকে জানাননি। এমনকি আমাকে কখনো এমপিওর মিটিং বা কাগজপত্র যাচাই করতেও বলা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ডিডি এস.এম আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের  তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। 
প্রসঙ্গত, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর