আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন অগণিত ছবি, ভিডিও ও
অডিও ঘুরে বেড়ায়। অনেকটাই এত বাস্তব মনে হয় যে মুহূর্তেই মানুষ তা সত্য বলে ধরে নেয়। এই সুযোগেই ভুল তথ্য ছড়ায় আরও দ্রুত। কারণ এখন এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিথ্যা বা কৃত্রিম কনটেন্ট বানানো খুব সহজ। তাই আসল–নকল চেনার দক্ষতা থাকা এখন জরুরি।
১. ছোটখাটো অসংগতিতে নজর রাখুন
এআই তৈরির ছবি বা ভিডিও প্রথম দেখায় নিখুঁত মনে হলেও হালকা খুঁটিনাটি লক্ষ করলে ভুল চোখে পড়ে। যেমন—হাতের আঙুল অস্বাভাবিক হওয়া, মুখের অংশে অদ্ভুত ঝাপসা ভাব, চোখের দৃষ্টি অপ্রাকৃতিক দিকের দিকে থাকা অথবা দাঁত অতিরিক্ত সমান বা অসমান দেখা। ভিডিও হলে ঠোঁটের নড়াচড়া ও শব্দ ঠিকমতো মিলছে কি না—এটিও গুরুত্বপূর্ণ। ঠোঁটের সাথে কথার গতি যদি এক না হয়, তাহলে তা ডিপফেক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
২. পেছনের পরিবেশেও লুকিয়ে থাকে সূত্র
কখনো প্রধান অবয়ব ঠিকঠাক হলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে ভুল ধরা পড়ে। যেমন—ছায়া ভুল দিকে পড়া, আলো অস্বাভাবিক হওয়া, বস্তু বিকৃত দেখা, একই জিনিস একাধিকবার দেখা বা পরিবেশ অতিরিক্ত “পারফেক্ট” দেখানো। এগুলো এআই কনটেন্টের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
৩. উৎস খুঁজে নিন
কোনো ছবি বা ভিডিও সন্দেহজনক মনে হলে প্রথম কাজ হলো উৎস যাচাই। গুগল লেন্সের মতো রিভার্স সার্চ টুলে দেখুন—কনটেন্টটি এর আগে কোথাও ব্যবহৃত হয়েছে কি না, বা কোনো কৃত্রিম ছবি তৈরির সাইটে পাওয়া যায় কি না। সেক্ষেত্রে এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা জরুরি।
৪. কথা, শব্দ ও বর্ণনায় অসঙ্গতি দেখুন
এআই এখন মানুষের কণ্ঠও নকল করতে পারে। তাই অনেক সময় পরিচিত ব্যক্তিকে ব্যবহার করে ভুয়া বক্তব্য ছড়ানো হয়। এগুলোর মধ্যে সাধারণত উচ্চারণ, বলার গতি বা ঠোঁটের নড়াচড়ায় সূক্ষ্ম অমিল থাকে। একইভাবে, এআই তৈরি লেখায় দেখা যায় অস্বাভাবিক বাক্য, একই শব্দ বারবার ব্যবহার বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য।
৫. নির্ভরযোগ্য সূত্রকে মানুন
যে কোনো ভাইরাল দাবি বা খবর যাচাই না করে বিশ্বাস বা শেয়ার করা উচিত নয়। সন্দেহজনক পেজ, সত্যতা–অজানা ওয়েবসাইট বা যাচাইহীন অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া তথ্য বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। তাই সরকারি প্রতিষ্ঠান বা বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যমকে অগ্রাধিকার দিন।
ভুয়া কনটেন্ট রোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা। চোখে পড়া যেকোনো ছবি–ভিডিও আগে যাচাই করুন এবং নিশ্চিত না হয়ে কিছুই শেয়ার করবেন না। তথ্যের যুগে সচেতন মানুষই সবচেয়ে বড় শক্তি।
এসআর
মন্তব্য করুন: