মহাবিশ্বের এক গভীর রহস্য এবার খুলে গেছে।
নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ প্রথমবারের মতো একটি বিশাল লাল তারার বিস্ফোরণের ঠিক আগ মুহূর্তের ছবি তুলেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি এক অভূতপূর্ব সাফল্য।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, এতদিন যেসব বিশাল তারা হঠাৎ “অদৃশ্য” হয়ে যাচ্ছিল, তারা আসলে ধুলার আড়ালে লুকিয়ে ছিল। গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু হলো ‘এসএন২০২৫পিএইচটি’, একটি সুপারনোভা যা প্রথম শনাক্ত হয় ২০২৫ সালের ২৯ জুন, পৃথিবী থেকে প্রায় চার কোটি আলোবর্ষ দূরে অবস্থিত গ্যালাক্সি ‘এনজিসি ১৬৩৭’-এ।
জেমস ওয়েবের ইনফ্রারেড দৃষ্টি বিজ্ঞানীদের হাবল টেলিস্কোপের পুরনো ছবির সঙ্গে তুলনা করে বিস্ফোরিত তারাটিকে শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে। এটি একটি গভীর লাল, বিশালাকার সুপারজায়ান্ট, যার উজ্জ্বলতা সূর্যের তুলনায় প্রায় এক লাখ গুণ বেশি।
গবেষকরা জানান, তার চারপাশের ধুলা কার্বনসমৃদ্ধ, যা সাধারণত সুপারজায়ান্ট তারায় অক্সিজেনভিত্তিক হয়। ধুলার ঘন আবরণ তার প্রকৃত উজ্জ্বলতাকে ঢেকে রেখেছিল, ফলে পৃথিবী থেকে দেখা যাওয়া আলোর মাত্র অংশই ছিল দৃশ্যমান। নীল আলো ধুলায় শোষিত হওয়ায় তারাটিকে রক্তিম আভায় দেখা গেছে, যেন মহাবিশ্বের গোধূলি আলোর মাঝে শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে লাল ও ধুলায় ঢাকা সুপারজায়ান্ট বিস্ফোরণ। জেমস ওয়েবের ইনফ্রারেড ছবি ধুলার দেওয়াল ভেদ করে সেই দৃশ্য উন্মোচন করেছে, যা মহাবিশ্বের বৃহৎ তারাগুলোর জীবন ও মৃত্যু বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলেছে।
এক কথায়, এই চিত্র কেবল একটি তারার শেষ অধ্যায় নয়; এটি যেন মহাবিশ্বের গোপন নাট্যমঞ্চে প্রথমবারের মতো মানুষের উপস্থিতি নির্দেশ করছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: