বাংলাদেশ ফুটবলের ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের অদক্ষতা, অসঙ্গতি ও দায়হীনতার অভিযোগ আবারও সামনে এসেছে। সমর্থকদের হতাশা যেন এক যন্ত্রণাদায়ক চক্রে পরিণত হয়েছে—নানা প্রতিশ্রুতি, অব্যাহত ব্যর্থতা আর নেতৃত্বের অনির্বচনীয় অবস্থান ফুটবলের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে চলেছে।
স্পনসরশিপ দাবি নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, যাদের নাম ব্যবহার করে ‘স্পন্সর’ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তারাই জানেন না যে তারা নাকি বাংলাদেশ ফুটবলকে স্পন্সর করছে! বিষয়টি এতটাই হাস্যকর ও বিব্রতকর পর্যায়ে গেছে যে ফুটবলপ্রেমীরা মন্তব্য করছেন— “ফাহাদ করিম যেন মিথ্যার এক নতুন রাজা!”
সমর্থকদের মতে, প্রতিটি বিতর্কের কেন্দ্রেই এখন একই ব্যক্তির উপস্থিতি—কখনো ম্যাচ টিকিট নিয়ে বিভ্রান্তি,
কখনো কিট স্পনসর নিয়ে ভুল তথ্য, এবার আবার লিগ স্পনসরশিপ নিয়ে ভিত্তিহীন দাবি।
ফুটবলভক্তদের সোজা অভিযোগ—ফাহাদ করিম বারবার এমন তথ্য ছড়াচ্ছেন, যার সত্যতা নেই, যাচাই নেই, আর পেশাদারিত্বের তো প্রশ্নই নেই। তার কথাবার্তা ও আচরণ এখন “মিথ্যার রাজনীতি” বলেই বিবেচিত হচ্ছে সমর্থকদের চোখে।
বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন, পেট্রোনাস অস্বীকার করেছে তারা বাংলাদেশ ফুটবলকে কোন স্পন্সর করে নি।
কাজী সালাউদ্দিনের যুগে সমর্থকদের আক্ষেপ ছিল প্রকাশ্য। বলা হতো—যতদিন ‘আপা’ আছেন, ততদিন সালাউদ্দিনও বহাল থাকবেন। প্রেক্ষাপট বদলেছে, নেতৃত্ব পরিবর্তনের আশা জেগেছিল; তবে মাত্র এক বছরেই সেই স্বপ্ন ম্লান হয়েছে। ফুটবলের দায়িত্ব এখন আরও দুর্বল হাতে, যেখানে কাজের চেয়ে কথার জোর বেশি—আর সেই কথার ভেতরেই ফুটে ওঠে চাতুর্য, অপারদর্শিতা এবং দায়িত্বহীনতা।
পেশাদার কাঠামোর বদলে ফুটবল এখন বন্দী আত্মতুষ্ট, অদক্ষ ও কথাবাজ ব্যবস্থাপনার ওপর। এই চক্র ভাঙতে না পারলে মাঠে উন্নতি তো নয়ই, পরিকল্পনার টেবিলেও আলো জ্বলবে না। এখন প্রয়োজন দৃঢ় ও স্পষ্ট সিদ্ধান্তের—অযোগ্যতার ওপর দাঁড়ানো নেতৃত্ব যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের ফুটবল শুধু প্রতিশ্রুতির আতশবাজি দেখেই সময় কাটাবে, বাস্তব অগ্রগতি অর্জন করবে না।

এ পরিস্থিতিতে আরেকটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল লিগের সম্ভাব্য স্পনসরশিপ নিয়ে বিভ্রান্তি। পেট্রোনাস সোমবার এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানায়—“পেট্রোনাস বাংলাদেশ ফুটবল লিগের কোনো ধরনের স্পনসরশিপ চুক্তিতে সম্পৃক্ত নয়। লিগের সঙ্গে আমাদের নাম বা ব্র্যান্ড ব্যবহারের কোনো অনুমতিও দেওয়া হয়নি।”
মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পেট্রোনাস বিষয়টিকে ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ দাবি হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং তাদের নাম ব্যবহার করে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এ ঘটনায় ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে নতুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ফুটবল প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি বারবার মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে সমর্থকদের বিভ্রান্ত করছেন। বিশেষ করে ফাহাদ করিমের বিরুদ্ধে একের পর এক অসত্য তথ্য প্রচার এবং সমর্থকদের ভুল পথে পরিচালিত করার অভিযোগ তুলে সমালোচনার ঝড় বইছে ভক্তদের মাঝে।
ফুটবল অনুসারীরা মনে করছেন—এসব আচরণ শুধু প্রশাসনের দুর্বলতাই নয়, বরং দেশের ফুটবলের প্রতি এক ধরনের প্রতারণা। এই অনিয়ম, অস্পষ্টতা ও দায়িত্বহীনতাই আবারও সামনে এনেছে যোগাযোগ–ব্যবস্থার ভয়াবহ সীমাবদ্ধতা, যা বাংলাদেশের ফুটবলের পুনরুদ্ধারকে আরও কঠিন করে তুলছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: