দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ–২০২৫ সফলভাবে আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্ট পরিচালনায় বাংলাদেশ আবারও নিজের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। মাঠের লড়াইয়েও পিছিয়ে নেই স্বাগতিক রুপালী-বৃষ্টিরা। ইতোমধ্যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে নারী কাবাডি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পদক জয়ের অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে দলটি।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নারী দল দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ছিল, যার সুস্পষ্ট প্রভাব পড়েছে তাদের পারফরম্যান্সে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মাহবুব-উল-আলম মনে করেন, এই দল আরও বড় সাফল্যের সামর্থ্য রাখে। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সাফল্য আরও বাড়াতে সরকার বহুমুখী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় এগোচ্ছে।
সচিব মাহবুব-উল-আলম বলেন, “এ ধরণের আসরের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। আমাদের মেয়েরা দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যেভাবে তৈরি হয়েছে, তার মধ্য দিয়েই ইতোমধ্যে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়ার নিশ্চয়তা আমরা লাভ করেছি। আশা করছি, সেমিফাইনালে আমরা যদি চাইনিজ তাইপেকে হারাতে পারি, তবে পরবর্তীতে আমাদের লক্ষ্য থাকবে স্বর্ণ পদক অর্জনের। এই টুর্নামেন্ট থেকে আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—সব খেলাতেই দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। তাহলেই আমরা বিভিন্ন গেমসে আরও ভালো করতে পারব।”
সম্প্রতি সমাপ্ত এশিয়ান যুব গেমস ও ইসলামিক সলিডারিটি গেমসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একটা দেশ খেলাধুলা বা যে কোনো ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং ক্রীড়া বিজ্ঞানভিত্তিক প্রশিক্ষণ। খেলোয়াড়দের শারীরিক-মানসিক অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। খেলাকে শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক না রেখে জেলা–বিভাগীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ২০১টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। জেলা স্টেডিয়ামগুলো আধুনিকায়ণের প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা ও আশপাশে কয়েকটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্যও প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের জন্য বিকেএসপির পাশে ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আছে। পরামর্শকদের কাছ থেকে ডিজাইন পাওয়ার পরই অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হবে।”
নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ যে উচ্চমানের দক্ষতা দেখিয়েছে সেটিও তুলে ধরেন তিনি।
“বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয় যে আমরা সফলভাবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আয়োজন পরিচালনা করছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল মনোমুগ্ধকর। পুরো টুর্নামেন্টই পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক ও আর্থিক সবধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর আগে আমরা ভলিবল, আর্চারি ও ফুটবলেও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট সফলভাবে আয়োজন করেছি। এবার ১১ দেশের নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আরও বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের সক্ষমতা তৈরি করবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: