অ্যাশেজের শতাধিক বছরের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো টেস্ট
ম্যাচ মাত্র দুই দিন স্থায়ী হলো। পার্থে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ট্রাভিস হেডের তড়িৎগতির সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। তবে মাঠে ফলাফল যাই হোক, প্রশাসনিক দিক থেকে বড় ধাক্কাই খেল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)— দুই দিনেই খেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
দুই দিনে শেষ হওয়া ম্যাচে রেকর্ড পতন
পার্থ টেস্টের প্রথম দিনেই পড়েছিল ১৯ উইকেট— অ্যাশেজের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড ১৭২ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়। অস্ট্রেলিয়াও প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে গুটিয়ে যায়। ফলে ইংল্যান্ডের লিড দাঁড়ায় ২০৫। কিন্তু লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ট্রাভিস হেড মাত্র ৬৯ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান এবং মাত্র ২৮.২ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্বাগতিকরা।
৬০ হাজার দর্শকের টিকিট একদিনেই অকার্যকর
টেস্ট ম্যাচটি মাত্র দুই দিনেই শেষ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তৃতীয় দিনের দর্শকেরা। প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই টিকিট কিনেছিলেন। সেই হতাশার জন্য ম্যাচ শেষে ক্ষমাও চান হেড—
“যারা আগামীকাল মাঠে এসে খেলা দেখার আশা করেছিলেন, তাদের জন্য খারাপ লাগছে। আশা করি আবারও এমন দিন আসবে যখন গ্যালারি ভরে যাবে।”
বিশাল দর্শকসমাগম, তারপরও অর্থনৈতিক লোকসান
পার্থে প্রথম দুই দিনে গ্যালারিতে ছিল নজিরবিহীন ভিড়—
প্রথম দিন: ৫১,৫৩১ দর্শক
দ্বিতীয় দিন: ৪৯,৯৮৩ দর্শক
মোট দর্শকসংখ্যা ছাড়িয়েছে ১,০১,৫০০— যা আগের বছর আয়োজিত পার্থ টেস্টেও হয়নি। অথচ খেলা তৃতীয় দিনে গেলে সিএ আরও কয়েক মিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ পেত।
দেশটির সংবাদ সংস্থা এএপি জানিয়েছে, শুধু তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের টিকিট বিক্রি বাতিল ও সম্প্রচারের আয়ের ক্ষতির কারণে সিএ–র লোকসান কমপক্ষে ৩ মিলিয়ন ডলার।
হাসতে হাসতে আগেই ক্ষতির ইঙ্গিত
ম্যাচ শুরুর আগে সিএ–র প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনই হালকা রসিকতার ছলে বলেছিলেন—
“প্রথম দিনে বেশি উইকেট পড়লে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান, স্পনসর, দর্শক— অনেকেরই মাথায় হাত।”
তার আশঙ্কাই সত্যি হলো; কারণ তৃতীয় দিনের টিকিটও আগেই পুরোপুরি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।
আগের লোকসানের চাপ আরও বাড়ল
গত মাসে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় সিএ জানিয়েছিল, বিগত বছরে তাদের লোকসান হয়েছে ১১.৩ মিলিয়ন ডলার। ভারতের সঙ্গে অত্যন্ত লাভজনক সিরিজ থাকা সত্ত্বেও এই ক্ষতি হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিল সংস্থাটি। নতুন মৌসুমে দর্শক সমাগম, টিভি রেটিং এবং স্পনসরশিপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিল সিএ— কিন্তু অ্যাশেজের প্রথম টেস্টই তাদের অঙ্ক পাল্টে দিয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: