একটি জয়ের জন্য কত দীর্ঘ অপেক্ষা! শেষবার ২০০৩ সালে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
এরপর টানা ১০ ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি লাল-সবুজেরা। অবশেষে ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও সেই একই মাঠে—ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে—ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ ১-০ গোলে জয়ের স্বাদ পায় প্রতিবেশী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে।ম্যাচের ১২ মিনিটেই দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন তরুণ ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন। তবে ম্যাচজুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন প্রিমিয়ার লিগে খেলা ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তারকা হামজা চৌধুরী। রক্ষণে ও আক্রমণে তার কার্যকর ভূমিকা বাংলাদেশকে ধরে রাখে এগিয়ে থাকা অবস্থানে।
এই ম্যাচটি দুই দলের জন্যই বাছাইপর্বে তেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, কারণ তারা আগেই পরের রাউন্ড থেকে ছিটকে গেছে। তবে ম্যাচটি ছিল মর্যাদার লড়াই। আর সেই মর্যাদা রক্ষাতেই লাল-সবুজেরা জয় তুলে নেয় দৃঢ়তা-অদম্যতা ও শৃঙ্খলার পরিচয় দিয়ে।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। আর গত ২৫ মে শিলংয়ে খেলা ম্যাচটিও ছিল হামজার জাতীয় দলে অভিষেক। সেই অভিষেকের ধারাবাহিকতায় এবার ঘরের মাঠে তিনি হয়ে ওঠেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভরসা।
মোরসালিনের গোলের পরও দুশ্চিন্তা ছিল শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ম্যাচ নষ্ট হওয়ার। কারণ ঠিক চার দিন আগেই নেপালের বিপক্ষে হামজার জোড়া গোলের ম্যাচটি শেষ মুহূর্তের গোল খেয়ে ড্র করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে ভারত এবার লাল-সবুজদের ডিফেন্স ভাঙতে পারেনি।
ম্যাচের শুরুতে আক্রমণে এগিয়ে ছিল ভারত। কিন্তু ১২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে তিনজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে রাকিব হোসেন যে ক্রসটি তুলে দেন, তা নিখুঁতভাবে জালে জড়ান মোরসালিন। ভারতের গোলরক্ষক এগিয়ে এলেও বাধা হতে পারেননি।
গোল হজমের পর ভারত চাপ বাড়াতে থাকে। কিন্তু গোলরক্ষক মিতুল মারমা এবং রক্ষণভাগের দুর্দান্ত সমন্বয়ে তারা ব্যর্থ হয়। একাধিকবার গোললাইন সেভ করে বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করেন হামজা চৌধুরী। তার একটি দূরপাল্লার শটও পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়।
মাঠে উত্তেজনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। ম্যাচের আগের দিনই অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন—“এই ম্যাচে অনেক কিছুই ঘটবে।” সেটাই যেন সত্যি হয়। ৩৩ মিনিটে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। রেফারি বাংলাদেশের তপু বর্মণ এবং ভারতের নারাভি নিখিলকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে শান্ত করেন।
এর আগে ২৭ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ ডিফেন্ডার তারিক কাজী। তার জায়গায় মাঠে নামেন মোহামেডানের তরুণ ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু।
অবশেষে নির্ধারিত সময় শেষে ১-০ গোলের জয়ে ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটায় বাংলাদেশ। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ শেষে লাল-সবুজদের পয়েন্ট দাঁড়ালো ৫।
এসআর
মন্তব্য করুন: