[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে চাই: অধিনায়ক রূপালী আক্তার

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, ১১ দেশের লড়াই ঢাকায়, স্বপ্ন দেখছে লাল-সবুজ নারী দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ৭:১১ পিএম

দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের প্রতিযোগিতা আগামীকাল (১৭ নভেম্বর) ঢাকায় পর্দা উঠতে যাচ্ছে। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে মোট ১১টি দেশ—যার মধ্যে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, রানার্সআপ ইরান এবং আয়োজক বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই দশ অতিথি দল ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ নারী দল, যারা নিবিড় প্রস্তুতি ক্যাম্প শেষে টিম হোটেলে উঠেছে।

প্রথমবারের মতো যেকোনো স্তরের কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব’ উদযাপনের অংশ হিসেবেই আয়োজন করা হয়েছে এই নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। প্রথম বিশ্বকাপটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের পাটনায় ২০১২ সালের ১–৪ মার্চ। সেই আসরে ১৬ দেশ চার গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অংশ নেয়; ভারত ফাইনালে ইরানকে ২৫-১৯ পয়েন্টে হারিয়ে হয় চ্যাম্পিয়ন। বাংলাদেশ ‘সি’ গ্রুপে অপরাজিত থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল, যদিও জাপানের কাছে ১৫-১৭ পয়েন্টে হেরে শেষ হয় লাল-সবুজের বিশ্বকাপ যাত্রা। শেষে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিল বাংলাদেশ।

এবার ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে অভূতপূর্ব সুযোগ—পদক জয়ের হাতছানি। চলতি বছরের মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ঐতিহাসিক ব্রোঞ্জ জয়ের পর থেকেই দলটি বিশ্বকাপের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে আসছে। কোচিং স্টাফদের মতে, আগের তুলনায় বাংলাদেশ দল এখন ফিটনেস, কৌশলগত প্রস্তুতি এবং দলীয় সমন্বয়ে বেশ উন্নত অবস্থানে রয়েছে—যা দলের বড় শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

প্রধান কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি এবং অধিনায়ক রূপালী আক্তার জানিয়েছেন, তারা প্রথম বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। আগামীকাল মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো শুরু হবে। রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় অনুষ্ঠিত হয় ট্রফি উন্মোচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ট্রফি উন্মোচন করেন। উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম বিপিএম, সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ এবং অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়করা।

বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন এক স্মরণীয় আয়োজনের মাধ্যমে দেশে নতুন মাইলফলক স্থাপন করতে চায়। আসরের আগে সাধারণ সম্পাদক এস এম নওয়াজ সোহাগ বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এ আয়োজন সফল করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করবে। বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন পৃষ্ঠপোষকদের উদার সহায়তা ছাড়া সম্ভব হত না।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের কাবাডি পরিবারের প্রতিটি সদস্য এই আসরকে সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দলের সদস্যরা বিশ্বমঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুত। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”

গ্রুপ পর্ব : ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারত, থাইল্যান্ড, উগান্ডা এবং জার্মানির।

              ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে ছয় দল—ইরান, নেপাল, চাইনিজ তাইপে, পোল্যান্ড, কেনিয়া এবং জাঞ্জিবার।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আসরের উদ্বোধন করবেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম।

প্রথম ম্যাচ নিয়ে অধিনায়ক ও কোচের মন্তব্য 

বাংলাদেশ অধিনায়ক রূপালী আক্তার বলেন: “উগান্ডার বিপক্ষে আমাদের প্রথম ম্যাচ। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে চাই। এই প্রতিযোগিতার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি, মেয়েরা সবাই ভালো পারফরম করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত। দল নিয়ে আমি ভালো কিছু করার ব্যাপারে আশাবাদী।”

কোচ শাহনাজ পারভীন মালেকা জানান: “উগান্ডার সাথে আমাদের প্রথম ম্যাচ। তারা অন্য দলগুলোর মতোই পদকের লক্ষ্য নিয়ে এসেছে। প্রথম ম্যাচে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। শুরুর কয়েক মিনিট দেখে নিতে হবে উগান্ডা কোন দিকটায় বেশি শক্তিশালী। প্রতিপক্ষকে বুঝে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব। যেহেতু নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ, আমরাও ভালো কিছু পেতে চাই। শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ—আমরা চেষ্টা করব ভালোভাবে শুরু করতে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর