[email protected] শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
২৫ আশ্বিন ১৪৩২

ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়াম

সাংবাদিকদের আসন দখলে আয়ের পথে বাফুফে, বিক্ষোভে উত্তাল প্রেসবক্স, সভাপতি তাবিথের দুঃখ প্রকাশ

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৫ ৬:৩৯ পিএম

ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-হংকং চায়না ম্যাচে ঘটে গেছে চরম বিতর্কিত ঘটনা। সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত স্কাইভিউ আসন দর্শকদের কাছে বিক্রি করে দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) এক প্রভাবশালী সহ-সভাপতি। এতে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা মাঠেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ম্যাচ কাভারেজ বর্জনের হুমকি দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছুটে আসেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং দুঃখপ্রকাশ করে সমঝোতায় আনেন গণমাধ্যমকর্মীদে

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) প্রেসবক্সের চতুর্থ তলার ছাদে সাংবাদিকদের সুবিধার্থে শেড ও চেয়ার স্থাপন করেছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিয়মিত কাভারেজ করা প্রতিবেদকরা দ্বিতীয় তলায় বসবেন, আর অতিরিক্ত সাংবাদিক বা সাইড স্টোরি করাদের জন্য ছিল স্কাইভিউ ওভারফ্লো জোন। কিন্তু সেই জায়গা সাংবাদিকদের না দিয়ে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় দর্শকদের কাছে।

সাংবাদিকদের অভিযোগ, সিঙ্গাপুর ও ভুটানের বিপক্ষে আগের ম্যাচগুলোতেও একই কাণ্ড ঘটানো হয়েছিল, তবে তখন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচের দিন) একাধিক সাংবাদিক স্কাইভিউতে প্রবেশ করতে গেলে বাফুফে-নিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের আটকে দেন। বারবার বাধা পেয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েকজন ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এ সময় ‘টেকনো’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচয়দানকারী একজন ব্যক্তি দাবি করেন, তারা ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে আসনগুলো কিনেছেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন—“মিডিয়ার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বরাদ্দকৃত জায়গা কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হলো? আর কেন সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হচ্ছে?”

চাপা উত্তেজনা দ্রুত প্রেসবক্সজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা একযোগে প্রতিবাদে দাঁড়িয়ে যান। সকল সাংবাদিক ম্যাচ কাভারেজ ও ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন বর্জনের হুমকি দেন। উপস্থিত দর্শকদের মধ্যেও ছিলেন অখেলাপ্রেমী, এক দিনের অতিথি ও অভিজাত পরিবারের সদস্যরা, যাদের উপস্থিতি সাংবাদিকদের আরও অসন্তুষ্ট করে তোলে।

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে প্রেসবক্সে আসেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি সাংবাদিকদের অভিযোগ শোনেন এবং ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। একই সঙ্গে আশ্বাস দেন যে, ভবিষ্যতে এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতি আর সৃষ্টি হবে না। তাঁর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

সাংবাদিক সমাজের দাবি—জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যে স্থানটি সাংবাদিকদের জন্য তৈরি করেছে, সেটি শুধুই মিডিয়ার কাজের জন্য সংরক্ষিত থাকতে হবে। আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও বাণিজ্যিক স্বার্থে সাংবাদিকদের জায়গা বিক্রি করার বিরুদ্ধে তারা কঠোর অবস্থান জানান। এ ঘটনায় গণমাধ্যমকর্মীরা বাফুফের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও জবাবদিহির দাবি তুলেছেন।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর