ঘরের মাঠে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে রইল জার্মান দলটি।
হলুদ জার্সির ঢেউ উঠল গ্যালারিতে। চেনা আঙিনায় সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়ে এগিয়ে গেল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। প্রথমার্ধে দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে থাকা পিএসজি বিরতির পর আক্রমণের জোয়ার বইয়ে দিল। কিন্তু পোস্টের বাধায় মিলল না কাঙ্ক্ষিত গোল। ঘরের মাঠে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে রইল ডর্টমুন্ড।
সিগনাল এদুনা পার্কে বুধবার রাতে সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে জার্মান দলটি। প্রথমার্ধে চমৎকার ফিনিশিংয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন নিকলাস ফুয়েলখুগ।
গ্রুপ পর্বেও দেখা হয়েছিল দল দুটির। এই মাঠে ১-১ ড্র করেছিল পিএসজি। মঙ্গলবার ফরাসি দলটির কোচ লুইস এনরিকে বলেছিলেন, এবার জয় নিয়ে ফিরতে চান তারা। পূরণ হলো না তার চাওয়া।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে এই নিয়ে টানা ১১ ম্যাচে অপরাজিত রইল ডর্টমুন্ড (৭ জয়, ৪ ড্র)।
চতুর্দশ মিনিটে লক্ষ্যে ম্যাচের প্রথম শট নেয় ডর্টমুন্ড। অসুস্থতা কাটিয়ে ফেরা মিডফিল্ডার মার্সেল সাবিৎজার বল পান বক্সে। দুরূহ কোণ থেকে তার প্রচেষ্টা এগিয়ে এসে রুখে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
৩৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। ডিফেন্ডার নিকো শ্লটারবেক নিজেদের অর্ধ থেকে বল বাড়ান উঁচু করে। অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে প্রথম স্পর্শে বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে দোন্নারুম্মাকে পরাস্ত করেন জার্মান ফরোয়ার্ড ফুয়েলখুগ।
এই মৌসুমের আগে কখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলেননি ফুয়েলখুগ। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ছয়টি গোলে (৩ গোল, ৩ অ্যাসিস্ট) সম্পৃক্ত থাকলেন ৩১ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
৪২তম মিনিটে আরেক ধাক্কা খায় পিএসজি। অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ ফরাসি সেন্টার-ব্যাক লুকা এরনঁদেজ। তার বদলি নামেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান সেন্টার-ব্যাক লুকাস বেরাওদু।
দুই মিনিট পর প্রায় দ্বিগুণ হতে যাচ্ছিল ব্যবধান। বক্সের ভেতর থেকে সাবিৎজারের জোরাল ভলি ফিরিয়ে দেন দোন্নারুম্মা।
প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেনি পিএসজি। এই সময়ে গোলের জন্য তাদের তিন শটের সবগুলো হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। এর মধ্যে উসমান দেম্বেলের দুটি শট যায় পোস্টের অনেকটা বাইরে দিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে নিজেদের মেলে ধরে পিএসজি। ৪৮তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে তারা। বারকোলার সেই শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
৫১তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি পিএসজি। প্রথমার্ধে নিষ্প্রভ থাকা কিলিয়ান এমবাপের শট লাগে দূরের পোস্টে। পরক্ষণে আশরাফ হাকিমির নিচু শট লাগে আরেক পোস্টে।
৬০তম মিনিটে সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। বক্সে ভালো পজিশনে বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন ফুয়েলখুগ।
৭২তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান দেম্বেলে। এমবাপের পাসে সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের শট ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। ৮০তম মিনিটে তার আরেকটি শট উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে আরেকটি ভালো সুযোগ পায় সফরকারীরা। ভিতিনিয়ার ক্রসে বক্সের ভেতর থেকে ফাবিয়ান রুইসের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। বাকি সময়ে আর সুযোগ মেলেনি।
ডর্টমুন্ডের এই জয়ে জার্মান ফুটবল পেল দারুণ এক সুখবর। আগামী মৌসুমের ৩৬ দলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুন্ডেসলিগার শীর্ষ পাঁচ দল সরাসরি খেলতে পারবে।
এই ম্যাচে পিএসজি হারলেও ব্যবধানটা খুব বড় নয়। দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যাওয়ার ভালো সুযোগ এখনও তাদের থাকছেই। সেই লক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে নামবে তারা। ঘরের মাঠেই ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে আসরের পথচলা শুরু করেছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
এসআর
মন্তব্য করুন: