মেসিদের ভারত সফর অনিশ্চিত, চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে

ভারতে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য বহু প্রতীক্ষিত আর্জেন্টিনা সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন দলকে ভারতের কেরালা রাজ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছিল গত কয়েক মাস ধরে। এ লক্ষ্যে ভারতের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘ট্যাকটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট’ আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এএফএ) ২২৫ কোটি টাকার (প্রায় ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড) অগ্রিম পরিশোধও করে।

কিন্তু সম্প্রতি আর্জেন্টিনার পক্ষ থেকে সেই সফর ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেরালা সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

‘ট্যাকটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্টো অগাস্টিন এক বিবৃতিতে বলেন,

“আমরা জুন মাসেই পুরো অর্থ পরিশোধ করেছি। তারা আমাদের ধৈর্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছিল। এখন বলছে সফর এক বছর পিছিয়ে দিক—এটা স্পষ্টতই চুক্তি ভঙ্গ। এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।”

তিনি আরও বলেন,

“২০২৬ সালে বিশ্বকাপের সময় পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। তখন হয়তো আর্জেন্টিনা আর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন থাকবে না। আমরা যে অর্থ দিয়েছি, তা বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাঠে দেখার জন্য। ভক্তদের সঙ্গে প্রতারণা করা ঠিক নয়।”

কেরালার ক্রীড়ামন্ত্রী ভি আবদুরাহিমানও এ বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন,

“যদি তারা অক্টোবরের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, তাহলে তাদের সময়মতোই আসা উচিত। আগামী বছর আমাদের রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে, ফলে মার্চে ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয়। আর্জেন্টিনার এই প্রস্তাব আমরা গ্রহণ করছি না।”

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে কেরালায় দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল আর্জেন্টিনার। কিন্তু সফর পেছানোর ঘোষণায় লাখো ফুটবলপ্রেমী হতাশ হয়েছেন।

তবে সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। ডিসেম্বর মাসে মেসির কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি ও আহমেদাবাদ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সেটা আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সফর কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

উল্লেখ্য, আর্জেন্টিনার পরবর্তী আন্তর্জাতিক ম্যাচ রয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে—বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তারা মুখোমুখি হবে ভেনেজুয়েলা ও ইকুয়েডরের।

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ভারতের মাটিতে মাঠে দেখার স্বপ্ন দেখেছেন লাখো ভক্ত। ২২৫ কোটি টাকার চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পরও সফর পেছানোর প্রস্তাব শুধু একটি বাণিজ্যিক সমঝোতা নয়, ভক্তদের আবেগ ও আস্থার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এখন দেখার বিষয়, সংকটের নিষ্পত্তি কীভাবে হয়—চুক্তি রক্ষা নাকি বাতিল