বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।
তিনি বলেন, “সাকিব একজন অবৈধ সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন। সেটা ভুলে গেলে শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি হবে।”
শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমিনুল বলেন, “স্বৈরাচার সরকারের দোসর হিসেবে যিনি অবৈধ সংসদে এমপি হয়েছেন, তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখন রাষ্ট্রের হাতে। খেলার মাঠে দেশের প্রতিনিধিত্ব করলেও, স্বৈরাচার সরকারের প্রলোভনে পড়ে তিনি গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এর বিচার ইতিহাস নিজেই করবে।”
গত বছরের জুলাইয়ের আগে থেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন সাকিব। এরপর ৫ আগস্টে সরকার পতনের ঘটনার পর থেকে আর দেশে ফেরেননি তিনি। মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি সিরিজে তার ফেরার কথা থাকলেও জনরোষের আশঙ্কায় তিনি খেলায় অংশ নেননি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক আইনি প্রক্রিয়া ও মামলা চলমান রয়েছে। একটি মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগে কারাদণ্ডের আদেশও রয়েছে বলে জানা গেছে।
সাকিবের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ নতুন নয়। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। যদিও সে সময় মনোনয়ন পাননি। পরে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের মাঝপথে রাজনীতিতে প্রবেশ এবং সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েন।
বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলাকালীন সময়ে সামাজিক মাধ্যমে তার কিছু মন্তব্য ও অবস্থান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করে। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা ও জনরোষ তৈরি হয়।
সাকিব প্রসঙ্গে আরও বলেন, “দেশের মানুষ তার রাজনীতিতে অংশগ্রহণকে ভালোভাবে নেয়নি। তার মতো খেলোয়াড়দের উচিত ছিল জনগণের পক্ষে থাকা। কিন্তু তিনি ব্যক্তিস্বার্থে স্বৈরাচার সরকারের অংশ হয়ে গেছেন। যারা শহীদ হয়েছেন, যারা জীবন দিয়ে গণতন্ত্র চেয়েছেন, তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় সরকার গঠন হলে— যারা এই সরকারের সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা কেউ দায় এড়াতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশের মাটিতেই তাদের বিচার হবে।”:
বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল একপাক্ষিক ও অবৈধ। তবে নির্বাচন কমিশনসহ সরকারি পক্ষ তা অস্বীকার করেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: