'নেক্সট গ্লোবাল স্টার' ট্রায়ালে ঢাকায় আসছেন ৫২ জন প্রবাসী ফুটবলার। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে বড় পরিসরের প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়াল। আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বসবে এই তিন দিনের ফুটবলীয় জমজমাট আয়োজন, যার নামকরণ করা হয়েছে ‘বিএফএফ নেক্সট গ্লোবাল স্টার’ ট্রায়াল।
ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের ১৪টি দেশের ৫২ জন প্রবাসী ফুটবলার। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই খেলোয়াড়রা জাতীয় দল কিংবা ঘরোয়া লিগে খেলার আশায় যাচাই-বাছাইয়ে অংশ নিচ্ছেন। এটি দেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এত বড় সংখ্যক বিদেশে বেড়ে ওঠা ফুটবলারের অংশগ্রহণ।
যুক্তরাজ্য থেকে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণকারী : ট্রায়ালে সবচেয়ে বেশি সাড়া মিলেছে যুক্তরাজ্য থেকে—২০ জন ফুটবলার নাম নিবন্ধন করেছেন দেশটি থেকে। এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (১৪), সুইডেন (৫) ও কানাডা (২)। বাকি দেশগুলো—ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, ওয়েলস, ইতালি, মালয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া—থেকে একজন করে অংশ নিচ্ছেন।
বয়সসীমা ও নজর থাকবে যাদের ওপর : ট্রায়ালের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ থেকে ২৭ বছর। তবে মূল ফোকাস থাকবে অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারদের ওপর। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে অবশ্যই ২৭ জুনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানের পর্যবেক্ষণ ও প্রীতি ম্যাচ : তিন দিনের এই ট্রায়ালে থাকবে প্রতিদিন দুই ঘণ্টার দুটি সেশন, যেখানে খেলোয়াড়দের ভাগ করে পর্যবেক্ষণ করা হবে। শেষ দিন একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন থাকবে, যেখানে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী প্রবাসী ফুটবলাররাই খেলবেন।
পর্যবেক্ষণ ও নির্বাচন কাজ পরিচালনা করবেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু-র নেতৃত্বে একটি অভিজ্ঞ কোচিং প্যানেল। থাকবে দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোর কোচ ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলাররাও। জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও উপস্থিত থাকবেন, তবে তিনি কেবল পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকবেন।
নিজস্ব খরচে ঢাকায় আসবেন খেলোয়াড়রা : সব খেলোয়াড়ই নিজ নিজ খরচে ঢাকায় আসছেন। বাফুফে শুধু জার্সি, শর্টস ও মোজা দেবে। বুট, শিনগার্ডসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত সরঞ্জাম অংশগ্রহণকারীদের নিজস্ব ব্যবস্থায় আনতে হবে।
বড় স্বপ্ন দেখছে বাফুফে : ট্রায়াল উপলক্ষে রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাফুফের সহ-সভাপতি ও ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, "আমরা চাই, যারা বিদেশে বেড়ে উঠেছেন এবং বাংলাদেশের লিগ বা টুর্নামেন্টে খেলতে আগ্রহী, তাদের একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে একটি বন্ধন তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় দলেও কাজে লাগবে।"
তিনি আরও বলেন, "কেউ যেন এটা না ভাবে, আমরা শুধু প্রবাসীদের গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা তৃণমূলের ফুটবলের প্রতিও সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য—দেশের ভেতরের খেলোয়াড়দের গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে তুলে আনা, যেন আগামীতে বাংলাদেশ থেকেও হামজা চৌধুরীর মতো বিশ্বমঞ্চে খেলোয়াড় উঠে আসে।"
হামজা চৌধুরী থেকে অনুপ্রেরণা: ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশি জার্সিতে খেলা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা ফুটবলারদের নতুনভাবে উৎসাহিত করেছে। তার পথ ধরে আলোচনায় এসেছেন শমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম, কিউবা মিচেল ও সর্বশেষ জায়ান হাকিম। এই ট্রায়াল তাঁদের মতো আরও প্রতিভাবান ফুটবলারদের আবিষ্কারে সহায়ক হবে বলেই বিশ্বাস বাফুফের।
এসআর
মন্তব্য করুন: