[email protected] শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এশিয়ান কাপ বাছাই

হাভিয়ের কাবরেরার ব্যর্থ পরিকল্পনায় ধুঁকছে বাংলাদেশ দল, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে পরাজয়

এম. এ. রনী

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৫ ২:৪৩ পিএম

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেল বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে হাজারো দর্শকের সমর্থন নিয়েও হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা মাঠে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে ব্যর্থ হলো। হারের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে কোচের কৌশল ও দল পরিচালনা নিয়েও। শুরু থেকেই পরিকল্পনার দুর্বলতা এবং সিদ্ধান্তহীনতা ফুটে উঠেছে লাল-সবুজের পারফরম্যান্সে।

বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুর ম্যাচটি ছিল ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। গেট খোলার আগেই সমর্থকদের ভিড়, রঙিন ফ্লেয়ার, করতালি আর উদ্দীপনায় মুখর ছিল চারপাশ। কিন্তু সেই উদ্দীপনার প্রতিদান মাঠে দিতে পারেনি বাংলাদেশ দল।

কৌশলের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি কাবরেরার দলে:

বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কৌশল ও পরিকল্পনা যে কতটা দুর্বল ছিল, তা পুরো ম্যাচ জুড়ে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। শুরুতেই মূল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে বেঞ্চে রেখে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামানো হয় নবাগত শোমিত সোমকে। একইভাবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে অদলবদল করে ভাঙা-গড়া একাদশ মাঠে নামান কোচ। মাঠে সেই সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট ছিল।

দলে যোগ দেওয়া নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে যতটা উচ্চাশা ছিল, মাঠে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। আক্রমণ, রক্ষণ কিংবা মিডফিল্ড— কোথাও স্পষ্ট কোনো কৌশল চোখে পড়েনি। পরিকল্পনার অভাবে পুরো দল যেন দিশেহারা হয়ে পড়েছিল সিঙ্গাপুরের গোছানো আক্রমণের সামনে।

খেলার চিত্র: জয়ের স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশ, বাস্তবতায় বিধ্বস্ত:

খেলার শুরু থেকেই সিঙ্গাপুর কিছুটা আধিপত্য দেখায়। নবম মিনিটেই বাংলাদেশ রক্ষণের দুর্বলতায় প্রায় গোল হজম করে বসে। এরপর হাফটাইমের ঠিক আগে, ৪৫তম মিনিটে উই-ইয়াংয়ের ভলিতে পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল হজম করে তারা। রাকিব হোসেন একটি গোল শোধ দিলেও সেই উত্তেজনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

বাংলাদেশ ৬৭তম মিনিটে ২-১ ব্যবধানে একটি গোল পরিশোধ করে সমতায় ফেরার চেষ্টা করে, কিন্তু একের পর এক ব্যর্থ আক্রমণ, অসংলগ্ন পাসিং ও ডেড বল থেকে কিছুই আদায় করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের গ্লানিই ভাগ্যে জোটে।

বদলির সিদ্ধান্তেও হতাশা: 

দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্তন এনে ম্যাচে গতি আনার চেষ্টা করেন কাবরেরা। কিন্তু ফাহামিদুল, হৃদয়, তপু, এমনকি অভিষিক্ত শাহরিয়ার ইমন কাউকেই সঠিক জায়গায় ব্যবহার করতে পারেননি। একাধিক কর্নার, ফ্রি কিক— সবই গেছে ব্যর্থতায়।

ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ফাহিমের পেনাল্টির আবেদনও উপেক্ষিত হয়। অতিরিক্ত সময়ে তারিকের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এরপরই বাজে শেষের বাঁশি এবং হতাশার চূড়ান্ত রূপ নেয় ম্যাচটি।

সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের বদলে ফিরল নিঃশব্দতা : 

বিরতির সময় স্টেডিয়ামে লেজার শো হলেও গ্যালারির হাজারো সমর্থকের চেহারায় ছিল হতাশার ছাপ। খেলার শেষ বাঁশি বাজার পর গ্যালারিতে নেমে আসে শ্মশানের নীরবতা। বিপরীতে জয়ের উল্লাসে মাতেন সিঙ্গাপুরের খেলোয়াড়রা।

গ্রুপ ‘সি’ পরিস্থিতি: জটিল সমীকরণে বাংলাদেশ : 

এই হারের ফলে গ্রুপ ‘সি’-তে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের পয়েন্ট ৪ করে। ভারত ও বাংলাদেশের পয়েন্ট ১ করে। পরবর্তী ম্যাচে জিততে না পারলে বাংলাদেশ ছিটকে পড়বে এশিয়ান কাপের স্বপ্ন থেকে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর