ক্রিকেটপ্রেমী দেশের পরিচয় নিয়ে গর্ব করা বাংলাদেশে বর্তমানে চলছে একটি টেস্ট সিরিজ।
প্রতিপক্ষ, দীর্ঘদিনের ‘বিপদের বন্ধু’ জিম্বাবুয়ে। তবে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই গ্যালারির চিত্র ছিল বেশ হতাশাজনক—দর্শকশূন্যতা চোখে পড়ার মতো।
তবে গ্যালারির এই শূন্যতা দেখে যদি মনে হয়, দর্শকদের আগ্রহ নেই—তাহলে সেটা ভুল ধারণা। বরং সম্প্রচার মাধ্যমের সীমাবদ্ধতা এবং মানহীনতা এর পেছনে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেসরকারি কোনো টিভি চ্যানেল সিরিজটির বাণিজ্যিক সম্ভাবনা না দেখায়, খেলা সম্প্রচারের ভার পড়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর ওপর। তবে বিটিভির প্রচারে সেই আগ্রহের ছাপ দেখা গেছে তাদের অ্যাপে, যেখানে এক পর্যায়ে রিয়েল টাইম দর্শকসংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে যায়।
তবে সেই চাপ সামলাতে হিমশিম খেয়েছে বিটিভির প্রযুক্তি অবকাঠামো। কখনো দেখা গেছে ভিউয়ার কাউন্ট তিন লাখ, আবার কখনো তা অস্বাভাবিকভাবে হাজারে নেমে এসেছে। এ বিষয়ে বিটিভির এক কর্মকর্তা জানান, “দর্শকসীমা অতিক্রম করায় প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে।”
তবে দর্শকদের মূল অভিযোগ বিটিভির সম্প্রচারের মান নিয়ে। আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে সাধারণত খেলার ফাঁকে থাকে বিশ্লেষণ, পরিসংখ্যান, রিপ্লে এবং টেকনিক্যাল আলোচনার মতো উপাদান। কিন্তু বিটিভির সম্প্রচারে এর কিছুই নেই। এমনকি মধ্যাহ্নবিরতির সময়ও কোনো বিশ্লেষণী পর্ব দেখা যায়নি। অনেকটা দায়সারা ভাবেই সম্প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি হতাশাজনক পারফরম্যান্স যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে। আজকের ম্যাচেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে—নিজেদের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট হয়েছে শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, যখন বেসরকারি চ্যানেলগুলো এমন সিরিজ সম্প্রচার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন ভবিষ্যতে বিটিভিও কি এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের খেলা দেখাতে আগ্রহী থাকবে? ক্রিকেটারদের উন্নতি নিয়ে উদাসীনতা এবং ক্রিকেটের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে ধস যদি এভাবেই চলতে থাকে, তবে ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের হতাশা আরও বাড়বে—এতে সন্দেহ নেই।
এসআর
মন্তব্য করুন: