[email protected] শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋতুপর্ণার বিতর্কিত মন্তব্য: তারকা হলেই যা খুশি বলা যায়?

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৬:৩০ পিএম
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৬:৩৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নারী ফুটবল বর্তমানে নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় দলের কোচ পিটার বাটলারকে ঘিরে সিন্ডিকেট ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে যখন আলোচনা তুঙ্গে, তখন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন জাতীয় দলের ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা। তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে এক সমর্থকের কমেন্টের জবাবে ব্যবহৃত ভাষা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

তারকা হলেই যা ইচ্ছে তাই বলা যায়? 

একজন পেশাদার ফুটবলারের শুধু মাঠেই ভালো পারফরম্যান্স করলেই চলে না, বরং তার আচরণ ও ব্যবহারও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে তারকাদের প্রতিটি কথার প্রভাব পড়ে ভক্তদের ওপর। কিন্তু ঋতুপর্ণা চাকমার সাম্প্রতিক মন্তব্য অনেকের কাছেই অসংগতিপূর্ণ, অশোভন ও অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে।

একজন ফুটবলপ্রেমী নারী ফুটবলে চলমান সংকট নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন। সাধারণত ভক্তরা তাদের প্রিয় খেলোয়াড়দের কাছ থেকে যুক্তিপূর্ণ এবং পরিশীলিত প্রতিক্রিয়া আশা করেন। কিন্তু সেই ভক্তের মন্তব্যের জবাবে ঋতুপর্ণা এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়। ঋতুপর্ণার ওই মন্তব্যের পরপরই সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সাধারণ ফুটবলপ্রেমী থেকে শুরু করে বিশ্লেষকরা তার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করছেন। অনেকেই বলছেন, একজন তারকা খেলোয়াড় হয়ে এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ কাম্য নয়।

 

 

 

একজন ফুটবল ভক্ত লিখেছেন,
"আপনি যত বড় তারকাই হন না কেন, আপনাকে ভালো মনের মানুষ হতে হবে। বাহবা পেতে পারেন, তাহলে সমালোচনাও শুনতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি তারকা হয়ে যা খুশি তাই বলবেন।"

আরেকজন ক্ষুব্ধ মন্তব্য করে লিখেছেন,
"নারী ফুটবলের সংকট তো সিন্ডিকেটের কারণে তৈরি হয়েছে, কিন্তু এখন দেখছি কিছু খেলোয়াড়ের আচরণও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

সিন্ডিকেট বনাম শৃঙ্খলা: কে জিতবে?

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সিন্ডিকেট বিতর্কের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল। সিনিয়র ফুটবলারদের নেতৃত্বে যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে, তারা কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় বাধা দিচ্ছেন তারা।

এই ঘটনার মাধ্যমে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে কেউই রেহাই পাবে না। এমনকি সমর্থকরাও যদি কোনো খেলোয়াড়ের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাহলে তাদেরও কঠোর ভাষায় জবাব দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অবস্থান কী?

বাফুফে (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। কারণ একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড়ের কাছ থেকে সংযত আচরণ প্রত্যাশিত।

নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ কোথায় যাচ্ছে?

বাংলাদেশের নারী ফুটবল কয়েক বছর আগেও দারুণ অগ্রগতি দেখিয়েছিল। ২০২২ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সিন্ডিকেট বিতর্ক, কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, এবং খেলোয়াড়দের অশোভন আচরণ প্রমাণ করছে যে নারী ফুটবলের পেশাদারিত্ব এখনো অনেক দূরে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋতুপর্ণা চাকমার মন্তব্য কেবল একটি ঘটনা নয়, বরং এটি পুরো দলের নৈতিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন সময় এসেছে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার, নাহলে বাংলাদেশের নারী ফুটবল শুধু বিতর্কের বলয়ে ঘুরপাক খাবে, উন্নতির পথ খুঁজে পাবে না।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর