[email protected] শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২

দুই স্তরের টেস্ট ক্রিকেট ‘বাজে’ প্রস্তাব: ক্লািইভ লয়েড

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারি ২০২৫ ৪:০৬ পিএম
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ৪:০৮ পিএম

বিশ্ব ক্রিকেটের দুই স্তরে ভাগ হওয়া নিয়ে সৃষ্ট উত্তাপ আবারো চরমে উঠেছে। ২০২৭ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেটে এমন পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছেন ক্রিকেটের ‘বিগ থ্রি’ – অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারত।

তাঁদের প্রস্তাব অনুযায়ী, টেস্ট ক্রিকেট দুটি স্তরে বিভক্ত হবে। শীর্ষ স্তরে থাকবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে, বাংলাদেশের মতো দলের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডকে খেলতে হবে দ্বিতীয় স্তরে।

এ মাসেই আইসিসির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা এই তিন ক্রিকেট শক্তির, তবে এ প্রস্তাব শুনে সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের মধ্যে বিরক্তি ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন এবং মনে করেন, এটি বাস্তবায়িত হলে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারে চলে যাবে। লয়েড এমন বক্তব্য দিয়েছেন ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে। তাঁর মতে, দুটি স্তরের কাঠামো বাস্তবায়ন করা হলে এটি ক্রিকেটের জন্য বিপদ ডেকে আনবে, বিশেষ করে ছোট দলগুলো জন্য যা হবে বড় ধাক্কা।

এ বিষয়ে লয়েড বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে। এটি এমন একটি বাজে প্রস্তাব যা দ্রুত থামানো উচিত। এখানে তো ৩০-৪০টি দল নেই, কেবল ১০-১২টি দল রয়েছে। আমাদের এমন একটি কাঠামো দরকার যেখানে সব দল নিয়মিত খেলার সুযোগ পাবে।’

ক্লাইভ লয়েড টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্বও তুলে ধরেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট এখনও ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংস্করণ। তবে এখন মনে হচ্ছে এটিকে একপাশে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। যদি এমন কিছু হয়, তা হলে সেটা হবে বড় ভুল। আমাদের আরও ভালো কাঠামো দরকার, এবং আমাদের সবাইকে বসে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

তিনি দুই স্তরের কাঠামোর পরিণতি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এটি একটি বড় বিপর্যয় হতে পারে। নিচু স্তরের দলগুলো ভালো দলের বিপক্ষে খেলতে পারবে না, যার ফলে তাদের উন্নতি হবে না। যদি তারা শুধু নিজেদের মধ্যে খেলতে থাকে, তাদের উন্নতি কিভাবে হবে?’

লয়েড আরও উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, নিম্ন স্তরের দলগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি গভীর চিন্তা প্রকাশ করেছেন, ‘যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য টেস্ট ক্রিকেট “ইতিহাস” হয়ে যায়, তবে সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রায় ১০০ বছর ধরে আইসিসির অংশ। আমরা অত্যন্ত গৌরবময় ইতিহাসের অধিকারী।’

লয়েডের মতে, এখনও ক্রিকেটপ্রেমীরা টেস্ট ক্রিকেট দেখতে চান, এবং এটা শুধুমাত্র একটি প্রদর্শনী নয়, বরং একটি ক্রিকেটারের প্রকৃত সামর্থ্য প্রমাণ করার জায়গা। ‘টি-টোয়েন্টি শুধুমাত্র একটি প্রদর্শনী, কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট হলো প্রকৃত পরীক্ষার জায়গা।’

শেষে, তিনি বলেন, ‘আমার মতে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে না। এটি শিগগিরই থামিয়ে দেওয়া উচিত। আমাদের এমন একটি কাঠামো দরকার যেখানে প্রতিটি দল নিয়মিত খেলার সুযোগ পাবে।’

বিশ্ব ক্রিকেটের ভবিষ্যতের এই বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে এখনই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না, তবে ক্লাইভ লয়েডের মতো অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার এই পরিবর্তনকে সমর্থন করছেন না।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর