বাংলাদেশ ফুটবলের দুই গুরুত্বপূর্ণ কোচ—হাভিয়ের কাবরেরা ও পিটার বাটলার—এখন দায়িত্বে নেই। কাবরেরা, যিনি পুরুষ জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন, এবং বাটলার, যিনি নারী দলের কোচ ছিলেন, দুজনেই আপাতত দেশের বাইরে। ক্রিসমাস ছুটিতে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের নতুন কোনো চুক্তির খবর নেই।
তবে কি তাঁরা ফিরবেন? নাকি বাফুফে নতুন কোচের সন্ধানে রয়েছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার পাশাপাশি মার্চে শুরু হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক উইন্ডোর প্রস্তুতির চাপও ঘিরে ধরছে ফেডারেশনকে।
হাভিয়ের কাবরেরার ভবিষ্যৎ: ফিরবেন, নাকি বিদায়?
হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে বাফুফের চুক্তি শেষ হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। এখনও কোনো নবায়নের খবর নেই। তবে তাঁকে নিয়ে আলোচনা একেবারে শেষ হয়নি। কাবরেরা থাকবেন কি না, তা নির্ধারণ করতে বাফুফের জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ, মার্চ উইন্ডো সামনে রেখে কোচকে দল গঠন করতে হবে। ঘরোয়া লিগ থেকে খেলোয়াড় বাছাইয়ে মনোযোগী হওয়ার সময় এসেছে। আগের স্কোয়াড ধরে রাখলে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে না, যা এ মুহূর্তে খুব প্রয়োজন।
পিটার বাটলারের ভবিষ্যৎ: পুরোনো কোচের নতুন চুক্তি?
নারী দলের কোচ পিটার বাটলারকে ঘিরে আলোচনা কিছুটা অন্যরকম। বাফুফে তাঁর ওপর আস্থা রাখছে, এবং সম্ভবত তাঁকে ছেলেদের দলের কোচ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কোচ ও নারী ফুটবলারদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিবাদে বিতর্ক থাকলেও বাটলারের অভিজ্ঞতা ফেডারেশনকে নতুনভাবে ভাবাচ্ছে। বাটলার বর্তমানে দীর্ঘ ছুটিতে দেশের বাইরে আছেন। বাফুফে সাধারণত ছুটি নেওয়ার সময় ফিরতি টিকিট নিশ্চিত করে। তবে এবার তাঁর ফেরার তারিখ বা টিকিট নিশ্চিত করা হয়নি। তবু উভয় পক্ষ ইতিবাচক থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, বড় কোনো নতুন অফার না পেলে তিনি বাংলাদেশে ফিরবেন এবং চুক্তি নবায়ন হবে।
নারী ও পুরুষ দলের কোচ নিয়োগ নিয়ে রয়েছে দ্বৈত চাপ। নারী ও পুরুষ দুই দলের কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্তে বাফুফে দুটি আলাদা কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে। নারী দলের কোচ নিয়োগ করবে নারী উইং, যার নেতৃত্বে আছেন চেয়ারপারসন মাহফুজা আক্তার কিরণ। পুরুষ দলের কোচ নিয়োগ করবে জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি, যার নেতৃত্বে আছেন তাবিথ আউয়াল। এই দুই কমিটির সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন পাবে। যদিও এটি আনুষ্ঠানিকতার বিষয়, তবুও সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা কার্যকর করার জন্য সময় খুবই সীমিত।
এই সিদ্ধান্তগুলো পরে নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন পাবে, যদিও এটি কেবল আনুষ্ঠানিকতার অংশ। বাফুফে খুব শিগগির একটি নির্বাহী কমিটির সভা ডাকার পরিকল্পনা করছে, যা ঢাকার বাইরে হতে পারে। তবে প্রয়োজন হলে যেকোনো দিন জরুরি সভা করেও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।
ফেব্রুয়ারিতে নারী দলের কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যদিকে, পুরুষ দলকে মার্চ উইন্ডোর জন্য প্রস্তুত করতে হবে। তাই কোচ নিয়োগে দেরি হলে এর প্রভাব পড়বে পুরো দলীয় কাঠামোতে। নতুন কোচ কিংবা পুরোনো কোচের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন, যেকোনো সিদ্ধান্তই দ্রুত নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) কোচদের নিয়োগে এখন গুরুত্বপূর্ণ এক সময় পার করছে। হাভিয়ের কাবরেরা এবং পিটার বাটলারকে ঘিরে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। তাই বাফুফের জন্য এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা যথাসময়ে কার্যকর করা।
এসআর
মন্তব্য করুন: