২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম সাক্ষী হয়েছিল ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিশ্বকাপ ফাইনালের। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফ্রান্সের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কিলিয়ান এমবাপে করেছিলেন দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক। তবুও টাইব্রেকারে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার কাছে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফরাসি তারকা। সেই ক্ষত নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি।
ঠিক দুই বছর পর আবারও সেই লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনালে খেলতে নামলেন এমবাপে। তবে এবার সব হতাশা ভুলে লুসাইলের রাতটা নিজের করে নিয়েছেন ফরাসি সুপারস্টার। বুধবার রাতে আন্তঃমহাদেশীয় কাপের ফাইনালে মেক্সিকোর ক্লাব পাচুকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে তার দল রিয়াল মাদ্রিদ শিরোপা জিতেছে। এই জয়ের মাধ্যমে এমবাপে নিজের ক্যারিয়ারে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছেন।
রিয়ালের হয়ে শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচে এমবাপের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। তবে তিনি হ্যাটট্রিক করেননি। বরং ম্যাচের প্রথম গোলটি করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যাম ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে দুর্দান্ত সমন্বয়ে পাচুকার রক্ষণ ভেঙে দেন এমবাপে। তার এই গোলে রিয়াল ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে, ৫২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো গোল করেন। ডান পায়ের বাঁকানো শটে বল পাঠান গোলবারের উপরের কোণে। রদ্রিগোর এই গোলটি রিয়ালের লিডকে আরও মজবুত করে।
৮৩ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলটি নিশ্চিত করে রিয়ালের জয়। পাচুকার ডি-বক্সে অধিনায়ক লুকাস ভাসকেসকে ফাউল করেন ওসামা ইদ্রিসি। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দিলে স্পটকিকে গোল করেন ভিনিসিয়ুস। এতে করে ৩-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় রিয়ালের।
রিয়াল মাদ্রিদের সরাসরি ফাইনালে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়, গেল মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় রিয়াল মাদ্রিদ সরাসরি আন্তঃমহাদেশীয় কাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ পায়। অন্যদিকে, কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন পাচুকাকে প্লে-অফ পর্ব পাড়ি দিয়ে ফাইনালে আসতে হয়।
ম্যাচ শেষে লুসাইল স্টেডিয়ামে আয়োজিত জমকালো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি এবং খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এমবাপে এই শিরোপাকে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় অর্জন বলে উল্লেখ করেন।
দুই বছর আগে এই একই মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালের কষ্ট নিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন এমবাপে। তবে এবার সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে চ্যাম্পিয়নের হাসি নিয়ে লুসাইল ছাড়লেন তিনি। তার এই জয় শুধু রিয়াল মাদ্রিদেরই নয়, বরং তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের এক নতুন সূচনা হিসেবে গণ্য হবে।
এ জয়ের মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদ আরও একবার প্রমাণ করল কেন তারা ইউরোপীয় ফুটবলে শীর্ষ ক্লাবগুলোর একটি। এমবাপের নেতৃত্বে দলটি ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্যের স্বপ্ন দেখছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: