সকল গুঞ্জন কাটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিবকে ওয়ানডে দলে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। আবুধাবিতে চলমান টি-টেন লিগে খেলা নিয়ে ব্যস্ত সাকিব আল হাসান জাতীয় দলে ফিরতে চেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে ছাড়াই ওয়ানডে দলের চূড়ান্ত তালিকা জমা দিয়েছে। বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, ওয়ানডে স্কোয়াডে নেই সাকিবের নাম।
সাকিবের দলে না থাকার বিষয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, সাকিব নাকি বিসিবির কাছে দেশে খেলার স্বাধীনতা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উন্মুক্ত করা, এবং দেশ-বিদেশে যাতায়াতে পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। তবে বিসিবির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, সাকিব এমন কোনো শর্ত দেননি।
এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ড কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “সাকিবের মানসিক অবস্থার দিকে নজর দিয়ে আমরা মনে করেছি, এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে না রাখাই ভালো। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট আর জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার চাপ এক নয়। তার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পেশাদার ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলার পাশাপাশি জাতীয় দলে খেলার নজির নতুন নয়। এ অবস্থায় বিসিবির "মানসিক স্থিতি" যুক্তি অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে সাকিবের সাম্প্রতিক কিছু ব্যক্তিগত ও আইনি ঝামেলার প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাকিব বর্তমানে একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তদন্তের আওতায় আছেন। পাশাপাশি শেয়ারবাজার কারসাজির অভিযোগে তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আরও স্পর্শকাতর বিষয় হলো, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক সাকিব ও তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে।
বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সাকিবের বর্তমান অবস্থা ও আইনি জটিলতাগুলো স্পর্শকাতর। এসব কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তাকে দলে না রাখার সিদ্ধান্তকে "নীতিনির্ধারণী" বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা না হলেও জানা গেছে, এই সিরিজে সাকিবকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নির্বাচক কমিটির ওপর বোর্ডের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল।
ওয়ানডে সিরিজে সাকিবকে না রাখার ফলে টাইগারদের পরিকল্পনায় প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য দলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারত। তবে বিসিবি মনে করছে, সাকিবের অনুপস্থিতি দলের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।
এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিতর্ক থাকলেও বিসিবি সাকিবের ভবিষ্যৎ পারফরম্যান্সের ওপর আস্থা রাখছে। তার মানসিক ও পেশাদার অবস্থার উন্নতি হলে দলে ফেরানোর বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে বোর্ড।
এসআর
মন্তব্য করুন: