ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ফিরেই আলো ছড়ালেন কেন উইলিয়ামসন, তবে দিন শেষে চালকের আসনে ইংল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসন আবারও প্রমাণ করলেন কেন তাকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে ধরা হয়।
ক্রাইস্টচার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন তিনি গড়লেন অসাধারণ ৯৩ রানের ইনিংস। হ্যাগলি ওভালের সবুজ ঘাসে প্রথম দুই সেশনে সুবিধাজনক ব্যাটিং পরিস্থিতি কাজে লাগালেও, চা-বিরতির পর ইংল্যান্ড বোলাররা চমৎকারভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই ৮ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড সংগ্রহ করে ৩১৯ রান। স্পিনার শোয়েব বশির ২০ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে ছিলেন ইংল্যান্ডের সেরা অস্ত্র।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ উইকেটের ঘাসের আস্তরণ থেকে নতুন বলে সুবিধা পাওয়ার আশা করেছিলেন তিনি। স্টোকসের সেই আশা পূরণ করেন গাস অ্যাটকিনসন, যিনি নিজের বলেই দারুণ এক ক্যাচ ধরে দ্বিতীয় ওভারেই ডেভন কনওয়েকে বিদায় করেন।
নিউজিল্যান্ড অবশ্য এক চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত নেয়, সিরিজ সেরা উইল ইয়ংকে বেঞ্চে রেখে দেয়। তবে উইলিয়ামসন সেই সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করেন। শুরুতে ইংল্যান্ডের পেসাররা সুইং ও সিম দিয়ে তার বিপাকে ফেললেও, উইলিয়ামসন সেই চাপ সামলে উঠে নিজের ছন্দ খুঁজে নেন। টম লাথাম এসময় স্কোরবোর্ড সচল রাখেন, কাভার, পয়েন্ট ও মিড-অফ দিয়ে দুর্দান্ত সব ড্রাইভ খেলেন।
দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ রানের জুটিতে উইলিয়ামসনের অবদান ছিল মাত্র ৮ রান। ড্রিঙ্কস ব্রেকের পর ব্রাইডন কার্স লাথামকে ক্যাচ আউট করে তার ৪৭ রানের ইনিংসের ইতি টানেন। এরপর রচিন রবীন্দ্রর সঙ্গে জুটি বাঁধেন উইলিয়ামসন। এদিন উইলিয়ামসন এমন এক কীর্তি গড়েন, যা আগে কোনো কিউই ব্যাটার করতে পারেনি—৪ বা তার বেশি দলের বিপক্ষে টেস্টে ১০০০+ রান করার কৃতিত্ব।
লাঞ্চের পর, উইলিয়ামসন ও রবীন্দ্র বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছড়ান। কিন্তু শোয়েব বশির তাদের জুটি ভেঙে দেন। রবীন্দ্র ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে মিড-উইকেটে জ্যাক ক্রাউলির হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এরপর উইলিয়ামসন দারুণ দক্ষতায় স্পিনারদের বিপক্ষে রান করতে থাকেন এবং ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে চা-বিরতির আগে দলকে ১৯৩/৩ স্কোরে নিয়ে যান।
তবে শেষ সেশনে খেলা নাটকীয় মোড় নেয়। ইংল্যান্ডের পেসাররা উইকেট থেকে কোনো সহায়তা না পেয়ে শর্ট বলে কৌশল বদলায়। এতে সফলও হয় তারা। মিচেল পুল করতে গিয়ে ব্রাইডন কার্সের বলে হ্যারি ব্রুকের হাতে ক্যাচ দেন। উইলিয়ামসনও নিজের শতরান থেকে ৭ রান দূরে থাকতে ওয়াইড বলে কাট করতে গিয়ে ক্রাউলির হাতে ধরা পড়েন।
এরপর দ্রুতই ২২৭/৫ থেকে ২৫২/৭-এ পরিণত হয় নিউজিল্যান্ড। বশির ব্লান্ডেল ও নাথান স্মিথকে ফিরিয়ে দেন। তবে ম্যাট হেনরি ও গ্লেন ফিলিপস জুটি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও, বশির আবার আঘাত হানেন। হেনরি তার বলে লং-অনে ক্যাচ তুলে দেন। দিনের খেলা শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৩১৯/৮। ফিলিপস অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজিল্যান্ড: ৩১৯/৮ (কেন উইলিয়ামসন ৯৩, টম লাথাম ৪৭, গ্লেন ফিলিপস ৪১*; শোয়েব বশির ৪/৬৯)
এসআর
মন্তব্য করুন: