অ্যান্টিগা টেস্টের চতুর্থ দিনেই বোঝা যাচ্ছিল, বাংলাদেশের পরাজয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। আজ পঞ্চম দিনে প্রথম সেশনে মাত্র ৭ ওভার টিকে শেষ হয়ে গেল তাদের দ্বিতীয় ইনিংস। শেষ তিন উইকেটে মাত্র ২৩ রান যোগ করতে সক্ষম হওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল ১৩২ রানে। শরিফুল ইসলামের রিটায়ার্ড হার্টের মাধ্যমে শেষ হয় এই ইনিংস।
৩৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হওয়ার সময় ১০৯ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ আর কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের প্রথম ইনিংসের মতো ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ছিল দ্বিতীয় ইনিংসেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৪৫০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে, যেখানে জাস্টিন গ্রেভস সেঞ্চুরি করেন। এই বিশাল স্কোরের জবাবে বাংলাদেশ নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে ২৬৯ রানে, যা ছিল দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের অনন্য উদাহরণ। মুমিনুল হক, লিটন দাস এবং জাকের আলী—তিনজনই হাফ সেঞ্চুরি করেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন।
১৮১ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ১৫২ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। তাসকিন ৬৪ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ছয় উইকেটের কীর্তি গড়েন। কিন্তু এই অসাধারণ পারফরম্যান্সও বাংলাদেশের হতশ্রী ব্যাটিংকে রক্ষা করতে পারেনি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশাজনক চিত্র যেন নিয়মিত। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা যেন প্রতিটি ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি। ব্যাটাররা শুরুর পর নিজেদের ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ইনিংস গড়ার সময় ব্যাটারদের মাঝে দায়িত্বজ্ঞান এবং ধৈর্যের অভাব প্রকট। প্রথম ইনিংসে তিনজন ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি করলেও কেউই তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে পুরো টপ অর্ডার ভেঙে পড়ে রোচ ও সিলসের পেস আক্রমণে।
লিটন দাসের একটি ছোট ক্যামিও এবং মেহেদী হাসান মিরাজের লড়াই কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিল, তবে সেটিও যথেষ্ট ছিল না। দলের মূল ব্যাটারদের এই ধরণের ধারাবাহিক ব্যর্থতা টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সাম্প্রতিক ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য সিরিজে ফিরে আসার জন্য বাংলাদেশী ব্যাটারদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জই রয়ে গেলে। এখনই সময় এসেছে আত্মসমালোচনার। ব্যাটারদের আরও ধৈর্যশীল এবং টেস্ট ক্রিকেটের মানদণ্ড অনুযায়ী খেলার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। ফোকাস শুধু শুরুর ভালো করতে নয়, ইনিংস বড় করাতেও দিতে হবে। অন্যথায়, টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির পরিবর্তে ক্রমাগত ব্যর্থতার ছাপই থেকে যাবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: