অ্যান্টিগা টেস্টের চতুর্থ দিন, যখন বাংলাদেশ ছিল ৩৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করার জন্য, তখন তাদের ব্যাটিংয়ের যে অবস্থা তা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম ইনিংসের বিপর্যয়ের পর, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যখন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে রানের সংগ্রামে নেমে আসে, তখন তাদের একে একে উইকেট হারানোর মিছিল শুরুও হয়ে যায়।
যে দলটি কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় নামার জন্য পরিকল্পনা ও দৃঢ়তা দেখানোর কথা, সেই দলের ব্যাটসম্যানরা একের পর এক দায়িত্বহীন শট খেলতে শুরু করেন। চতুর্থ দিনের শুরুতেই ১ রান শূন্যে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান জাকির হাসান। এরপর আসে মাহমুদুল হাসান জয়, যিনি মাত্র ৬ রান করে ফিরেন। এর পর শাহাদাত দীপু, যিনি দীর্ঘ সময় পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন, তার ব্যাট থেকেও কিছুই বের হয়নি, ২০ রানে আউট হয়ে যান।
প্রথম চাপে পড়ার পর, মুমিনুল হক, যিনি বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তার দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিংও দুর্বল প্রমাণিত হয়। ১১ রানে তিনি ফিরে যান। এটি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের জন্য এক ধরনের সংকেত হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে একটি টেস্ট ম্যাচের শেষ অবধি শিরোনামেই থাকে দলীয় ঐক্য ও টেকসই ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন।
এছাড়া, দলের অন্যতম বড় নাম লিটন দাসও রান করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে তার এক বিলাসী শটের কারণে ৫৯ রানে ৫ উইকেট হারানো। এরপর মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটও খুব বেশি কিছু উপকারে আসেনি। ৪৫ রান নিয়ে মিরাজ ছিলেন দলের সেরা ইনিংস। তবে সেই ইনিংসও দলের প্রয়োজনীয়তা পূরণে যথেষ্ট ছিল না।
এতক্ষণে, বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক হয়ে উঠেছে। ৩৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে, চতুর্থ দিনের শেষে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় ৩১ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৯। আরও ২২৫ রান করার জন্য টাইগারদের হাতে সময় খুবই কম। সুতরাং, এটি বলা যায় যে বাংলাদেশের জন্য একটি টেস্ট হার আরেকটা মাত্র সময়ের ব্যাপার।
এখনকার পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং সমস্যাগুলোর কোনো উন্নতি ঘটছে না, বরং এই সমস্যাগুলিই তাদের ম্যাচ হারানোর প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। বিশেষত, দলটির ব্যাটিংয়ের অস্থিরতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে তাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মান হুমকির মুখে পড়ছে। দলের ব্যাটসম্যানদের যদি অবিলম্বে নিজেদের ব্যাটিং আচরণ পরিবর্তন না হয়, তবে বাংলাদেশের টেস্ট দলের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
এখন বাংলাদেশের সামনে প্রশ্ন: ব্যাটিংয়ের এই ধস থামাতে তারা কী করবে? কিংবা অ্যান্টিগা টেস্টের পর, পরবর্তী ম্যাচে তারা কিভাবে নিজেদের পুনরুদ্ধার করবে? বর্তমান অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে, তবে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের রোলার কোস্টার যাত্রা আরও এক ধাপ নিচে নামবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: