রেকর্ডের বরপুত্র মেসি: আন্তর্জাতিক ফুটবলে আরেকটি অনন্য অর্জন। লিওনেল মেসি শুধু আর্জেন্টিনার জার্সিতেই নয়, পুরো ফুটবল ইতিহাসেই নিজের নাম বারবার রেকর্ড বইয়ে লিখিয়ে যাচ্ছেন। এবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের রেকর্ডে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এলেন এই আর্জেন্টাইন জাদুকর। ল্যান্ডন ডনোভানের সঙ্গে তার এই অর্জন ফুটবল দুনিয়ায় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে পেরুর বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে দুর্দান্ত এক অ্যাসিস্টে গোল বানিয়ে দেন মেসি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে মেসি তার জাদুকরী ফুটবলের আরেকটি অধ্যায় উপহার দেন। বক্সের বাইরে বল পেয়ে একজন ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর তিন জন ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে নিখুঁত এক ক্রস বাড়ান লাউতারো মার্তিনেসের উদ্দেশ্যে। মার্তিনেস তার বাঁ পায়ের অসাধারণ ভলিতে বল জালে পাঠান।
এই অ্যাসিস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৫৮টি অ্যাসিস্ট করার কীর্তি গড়লেন মেসি। এতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি ল্যান্ডন ডনোভানের পাশে নিজের নাম লেখালেন।
ল্যান্ডন ডনোভান তার ক্যারিয়ারে ১৫৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। মেসি এই সংখ্যায় পৌঁছেছেন ১৯১ ম্যাচে। যদিও মেসির মোট গোল এবং অ্যাসিস্টের সম্মিলিত প্রভাব তাকে ফুটবলের ইতিহাসে আরও উপরে নিয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে অ্যাসিস্ট নিয়ে পরিসংখ্যান সবসময় সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে সংরক্ষিত হয়নি। যেমন, হাঙ্গেরির কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুশকাশ ৮৫ ম্যাচে ৮৪ গোলের অবিশ্বাস্য রেকর্ডের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে ৫৩টি অ্যাসিস্ট করেছেন বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে এই সংখ্যাটি কম-বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
অন্যদিকে, আরেক হাঙ্গেরিয়ান কিংবদন্তি সান্দর কচিশ ৬৮ ম্যাচে ৭৫ গোল করার পাশাপাশি ৫০টি অ্যাসিস্ট করেছেন বলে জানা যায়। তবে এই পরিসংখ্যানেও সামান্য অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলের অ্যাসিস্ট ৪৭টি বলে ধরা হয়, তবে সেটিও পরিসংখ্যানের সীমাবদ্ধতার শিকার।
বর্তমান সময়ের আরেক তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর আন্তর্জাতিক অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৪৮। মেসি তার চেয়ে ১০টি বেশি অ্যাসিস্ট করে একটি বড় ব্যবধান তৈরি করেছেন। অন্যদিকে, বেলজিয়ামের তারকা কেভিন ডে ব্রুইনের অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৪৯।
অবসরপ্রাপ্ত ফুটবলারদের মধ্যে মেসুত ওজিল ৪০টি এবং ডেভিড বেকহ্যাম ৩৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন। এই তুলনায় মেসির সংখ্যাগুলো তাকে অনেক এগিয়ে রাখে।
মেসির এই কীর্তি শুধু একটি রেকর্ড নয়, বরং ফুটবলে তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং খেলার প্রতি তার অবিচল নিবেদনকেই তুলে ধরে। গোল করার পাশাপাশি গোল বানানোর ক্ষেত্রেও তার দক্ষতা তাকে ফুটবলের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে খেলা তার প্রতিটি ম্যাচ ফুটবলপ্রেমীদের জন্য নতুন এক অধ্যায়। তার নতুন অর্জন শুধু আর্জেন্টিনার নয়, গোটা ফুটবলবিশ্বের জন্যই গর্বের বিষয়।
"মেসি রেকর্ডের জন্য খেলে না। তবে প্রতিটি রেকর্ড মেসির জন্য অপেক্ষা করে।"
এসআর
মন্তব্য করুন: