[email protected] মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
১৬ পৌষ ১৪৩১

৪৫ বছরের খরা কাটিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে মালদ্বিপের প্রথম জয়

এম. এ. রনী

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০৬ এএম

বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৪৫ বছরের জয়ের খরা কাটলো মালদ্বিপের। বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা মালদ্বীপের, কাবরেরার জন্য 'কষ্টদায়ক' ফল। অন্যদিকে বাংলাদেশের আজকের খেলাতে কোন পরিকল্পনাই চোখে পড়ে নাই।

 

ম্যাচের ফলাফলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ দলের রক্ষণের ভুল। বিশেষ করে, ১৯ মিনিটে মালদ্বীপের একমাত্র গোলটি আসে বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগের একটি বড় ভুলের কারণে। স্পট কিকের সময়, বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মণ তার রক্ষকদের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় করতে ব্যর্থ হন এবং অফসাইড ট্রাপের পরিকল্পনায় ভুল করেন। এর ফলস্বরূপ, মালদ্বীপের ফাসির সহজেই গোলটি করেন। এই মুহূর্তটি বাংলাদেশ দলের জন্য বড় একটি থাবা ছিল, যেটি ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়।

 

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বুধবার অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপ ১-০ গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে একটি ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে। বাংলাদেশের মাঠে প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মালদ্বীপের কোচ আলি সুজেইন, তবে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা এর বিপরীতে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

এই ম্যাচে ১৯ মিনিটে আলি ফাসিরের হেডে পাওয়া একমাত্র গোলটি মালদ্বীপকে জয় এনে দেয়। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে এমন একটি ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে মালদ্বীপ। ৪৫ বছরের ইতিহাসে এটি প্রথমবার, যখন বাংলাদেশে জয়লাভ করল তারা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মালদ্বীপ কোচ সুজেইন বললেন, “এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক জয়। ৪৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মাঠে মালদ্বীপ জিততে পারেনি, আজ সেটা সম্ভব হয়েছে। এর জন্য পুরো দলের প্রশংসা প্রাপ্য। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের ফুটবলের মধ্যে গত ৩-৪ বছরে অনেকটা পার্থক্য কমেছে। এখন আমরা একে অপরকে সমকক্ষ মনে করি।”

অন্যদিকে, ম্যাচের ফলাফল নিয়ে বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা ছিলেন দুঃখিত। খেলার ধারার বিপরীতে গোল হজম এবং সোহেল রানার পোস্টে লাগা শটের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ব্যর্থতায় হতাশ হন কাবরেরা। তিনি বললেন, “আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। এই হার সত্যি কষ্টদায়ক। দলের পারফরম্যান্সে কিছু ইতিবাচক দিক আছে, তবে শেষ পর্যন্ত গোল করতে না পারা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। আমার মতে, ৩-৪ গোলের সুযোগ ছিল, কিন্তু আমরা একটি গোলও করতে পারিনি।”

এখনো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে কাবরেরার সামনে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বিশ্বকাপ এবং এশিয়ান কাপ প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ এই ম্যাচে জয়ী হতে চেয়েছিল। কাবরেরা অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি হতাশ হলেও ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে মনোনিবেশ করবেন।

কাবরেরা আরও বলেন, “এটা খুব কঠিন ম্যাচ ছিল, আমরা সব কিছুই করেছি। আমাদের খেলার স্টাইল ছিল ভালো এবং পরিসংখ্যান দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায় যে আমরা বেশ কিছু আক্রমণ তৈরি করেছি, কিন্তু গোল করতে পারিনি। ফলাফলটা সত্যিই খুব কষ্টদায়ক। তবে এই ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শেখা যাবে, এবং পরবর্তী ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।”

দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের জন্য এটি হবে পরিসংখ্যানের পাশাপাশি মানসিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পরীক্ষা। কাবরেরার জন্য এটি বড় এক চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সামনে আরও প্রশ্ন উঠতে পারে।

মালদ্বীপের জয়ের মাধ্যমে পেছনে ফেলে রাখল বাংলাদেশ, আর কাবরেরার দলের জন্য এখন শুধুই সামনে তাকানোর পালা।

আগামী ১৬ নভেম্বর কিং এ্যারেনাতে দুই দল আবার মুখোমুখি হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর