২০০২ সালে ওয়াকার ইউনিসের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তান শেষবারের মতো সিরিজ জিতেছিল। এতদিন পর শাহিন-রউফদের দুর্দান্ত পেস আক্রমণে অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয়বার ওয়ানডে সিরিজ জয় করে দেশটি।
প্রায় দুই দশক পর আবারও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জিতল পাকিস্তান, আর এই জয়ে প্রধান ভূমিকা রেখেছে চার তারকা পেসার: শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ, এবং মোহাম্মদ হাসনাইন। পার্থে অনুষ্ঠিত সিরিজ নির্ধারনী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়ে পাকিস্তান তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিজের করে নেয়।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানের আগুনে পেস আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়ে। শাহিন আফ্রিদি ও নাসিম শাহের বিধ্বংসী স্পেলের মুখে অস্ট্রেলিয়া ২১তম ওভারের মধ্যে ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারায়। মাত্র দুজন ব্যাটার, ম্যাথু শর্ট (১৯) এবং অ্যারন হার্ডি (১২), দুই অঙ্কে পৌঁছাতে সক্ষম হন। ফর্মহীনতার কারণে অভিজ্ঞ জশ ইংলিশ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও বেশি কিছু করতে পারেননি।
শেষদিকে সিন অ্যাবট কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। অষ্টম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পার সাথে ৩০ এবং নবম উইকেটে স্পেনসার জনসনের সাথে ২২ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরকে একশো রানের সীমা পেরিয়ে নেয়। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। অস্ট্রেলিয়া ৩১.৫ ওভারে মাত্র ১৪০ রানে অলআউট হয়। অ্যাবট সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন, আর জাম্পা করেন ১৩ এবং জনসন অপরাজিত ১২ রানে থাকেন। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে আফ্রিদি ও নাসিম ৩টি করে উইকেট নেন, রউফ ২টি এবং হাসনাইন ১টি উইকেট তুলে নেন।
পাকিস্তান ১৪১ রানের ছোট লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনার সাইম আইয়ুব এবং আব্দুল্লাহ শফিক দৃঢ় হাতে ইনিংস শুরু করেন। তারা ৮৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ওপেনিং জুটি গড়ে পাকিস্তানকে জয়ের পথে নিয়ে যান। ১৮তম ওভারে সাইম (৪২) ও শফিক (৩৭) আউট হলেও এরপর বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান দ্রুত গতিতে রান তোলেন। তারা তৃতীয় উইকেটে ৫৮ বলে অপরাজিত ৫৮ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন, এবং তাদের জয়ের মুহূর্তে ১৩৯ বল বাকি ছিল। বাবর ২৮ এবং রিজওয়ান ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।
হারিস রউফ, তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন। সিরিজে সর্বাধিক ১০ উইকেট তুলে তিনি ছিলেন পাকিস্তানের পেস আক্রমণের প্রধান অস্ত্র। আফ্রিদি, নাসিম, এবং হাসনাইন যথাক্রমে ৮, ৫, এবং ৩ উইকেট নেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, এই সিরিজে কোনো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারই হাফ-সেঞ্চুরি করতে পারেননি, যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম।
আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে ব্রিজবেনে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও দুই দল মুখোমুখি হবে। এই সিরিজে পাকিস্তান তাদের দুর্দান্ত ফর্ম অব্যাহত রাখতে চাইবে, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়াতে চায়।
এসআর
মন্তব্য করুন: