[email protected] শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইচ্ছাকৃত জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়ার ক্ষতি

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ১১:১০ এএম

জুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য শুধু একটি ফরজ ইবাদতই নয়;

এটি উম্মাহর সাপ্তাহিক সম্মিলন, সামাজিক ঐক্য এবং ঈমানের শক্ততার প্রকাশ। কোরআন ও সুন্নাহতে এর গুরুত্ব বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দেন—
“হে মুমিনগণ! জুমার দিনে সালাতের আহ্বান শুনলে আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও।” (সুরা জুমা, ৯)
এই নির্দেশ শুধু নামাজ পড়ার আহ্বান নয়; বরং আল্লাহর ঘরের মর্যাদা রক্ষা ও আখিরাতে সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা।

ফরজ নামাজ ত্যাগ—গুরুতর অপরাধ

কোরআনে বলা হয়েছে—
যারা সালাত নষ্ট করে এবং খেয়াল-খুশির পথে চলে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। (সুরা মারয়াম, ৫৯)

এমনকি জাহান্নামীরা স্বীকার করবে—
“আমরা নামাজ পড়তাম না…” (সুরা মুদ্দাসসির, ৪২–৪৭)

এগুলো প্রমাণ করে যে, নামাজ ছেড়ে দেওয়া কোনো সাধারণ গাফিলতি নয়; এটি ঈমানের দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি।

জুমা বাদ দেওয়া আরও ভয়াবহ

জুমার নামাজ শুধু ব্যক্তিগত ইবাদত নয়; এটি সম্প্রদায়ের সাপ্তাহিক জমায়েত। তাই অন্য কোনো সালাত ত্যাগের তুলনায় ইচ্ছাকৃতভাবে জুমা ছেড়ে দেওয়া অনেক গুরুতর।

রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করেন—
“মানুষ যদি জুমা পরিত্যাগ করা বন্ধ না করে, তবে তাদের অন্তর সিলমোহর করে দেওয়া হবে।” (দারিমি ১৫২৪)

আরও বর্ণিত—
“যে তিন জুমা অলসতায় ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।” (তিরমিজি ৫০০)

ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন—
“তিন জুমা বাদ দিলে সে ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়।” (আবু ইয়ালা ২৭১২)

নামাজ ত্যাগ—কুফরির দ্বার

হাদিসে এসেছে—
“ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে নামাজ।” (মুসলিম ৮২)

হজরত উমর (রা.)-এর উক্তি—
“নামাজ ত্যাগকারী নিশ্চিত কাফের।” (বায়হাকি)

এজন্য অনেক ফুকাহা বলেছেন—ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ না পড়া ব্যক্তিকে বড় বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।

ফরজ সালাত বাদ দেওয়ার করুণ পরিণতি

রাসুলুল্লাহ (সা.) মুআয (রা.)-কে উপদেশ দিয়ে বলেন—
“ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো ফরজ নামাজ ছেড়ে দেবে না; কারণ এতে আল্লাহর নিরাপত্তা ও দয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়।” (মুসনাদে আহমদ)

কোরআন জানায়—
তাওবা করে, নামাজ কায়েম করে এবং জাকাত প্রদান করলে তবেই তারা মুসলিম সমাজের অংশ ধরা হবে। (সুরা তাওবা ১১)

এ থেকে বোঝা যায়—নামাজ ত্যাগ করলে মুসলিম পরিচয়ই হুমকির মুখে পড়ে।

জুমা না পড়ার কাফফারা

হাদিসে নির্দেশ—
“যে ওজর ছাড়া জুমা ছেড়ে দেয়, সে এক দীনার সদকা দিক; না পারলে অর্ধ দীনার।” (আবু দাউদ ১০৫৩)

অর্থাৎ জুমা বর্জন মানে আল্লাহর রহমতের দরজা নিজের হাতে আটকে দেওয়া।

দোয়া

আল্লাহ আমাদের অন্তরকে নরম করুন, নামাজকে জীবনের শান্তির উৎস বানিয়ে দিন, এবং প্রতিটি সিজদা যেন আমাদের ঈমানকে শক্তিশালী করে তোলে। আমিন।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর