ফরজ নামাজ মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক ইবাদত। তবে
ফরজের পাশাপাশি সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ, পাপমোচন ও অতিরিক্ত সওয়াবের আশা করা যায়। ফরজের মতোই নফল নামাজও দাঁড়িয়ে, রুকু-সেজদা করে আদায় করা হয়; শুধু নিয়ত ও রাকাতসংখ্যায় পার্থক্য থাকে।
সুন্নতে মুয়াক্কাদা (প্রতিদিন পড়া উত্তম)
প্রতিদিন মোট ১২ রাকাত সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পড়ার নির্দেশ রয়েছে:
জোহরের আগে ৪ রাকাত, পরে ২ রাকাত
মাগরিবের পরে ২ রাকাত
এশার পরে ২ রাকাত
ফজরের আগে ২ রাকাত
উম্মে হাবিবা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন—যে মুসলমান প্রতিদিন এ ১২ রাকাত নামাজ পড়ে, তার জন্য জান্নাতে বিশেষ ঘর তৈরি করা হয় (তিরমিজি)।
ইশরাকের নামাজ
সূর্য ভালোভাবে উদিত হওয়ার প্রায় ২০–৪৫ মিনিট পর ইশরাক নামাজ আদায় করা হয়।
রাকাত: ২ বা ৪ রাকাত
হাদিসে বলা হয়েছে, এ নামাজ মানুষের পাপমোচন ও আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত পাওয়ার মাধ্যম।
দুহা/চাশতের নামাজ
এই নামাজও পাপমোচন ও নেকির জন্য আদায় করা হয়।
সময়: সূর্যোদয়ের পর থেকে দুপুরের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত
রাকাত: ২ রাকাত, চাইলে বেশি পড়া যায়।
অনেক আলেম ইশরাক ও দুহাকে দিনের একই সময়সীমার ইবাদত বলে উল্লেখ করেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ
রাতের গভীরে ঘুম থেকে উঠে পড়া নফল ইবাদত।
ন্যূনতম: ২ রাকাত
উত্তম: ৮–১২ রাকাত
এ নামাজের গুরুত্ব নিয়ে বহু হাদিস আছে। নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায়কারী আল্লাহর বিশেষ প্রিয় বান্দাদের মধ্যে গণ্য হন।
তাহিয়্যাতুল ওজু
অজু করার পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়াকে তাহিয়্যাতুল ওজু বলা হয়।
কিছু বর্ণনায় রয়েছে, অজুর পর এ নামাজ পড়লে মহান প্রতিদান পাওয়া যায়।
তবে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও দুপুরের ঠিক মধ্যবেলায় এই নামাজ পড়া মাকরূহ।
তাহিয়্যাতুল মসজিদ
মসজিদে প্রবেশ করলে বসার আগে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে বলা হয়েছে।
রাসুল (সা.) এই আমল নিজে করতেন এবং সাহাবিদেরও তা করতেন। এটি মসজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি আমল।
অন্যান্য নফল নামাজ
প্রয়োজন বা মানসিক শান্তির জন্য আরও কিছু নফল ইবাদত রয়েছে:
সালাতুত তওবা (তওবার নামাজ)
সালাতুল হাজত (কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য)
সালাতুশ শোকর (শুকরিয়ার নামাজ)
এসব নামাজ সাধারণ নফলের মতোই পড়া হয়। তবে নিষিদ্ধ সময়গুলোতে কোনো নফল নামাজ পড়া যাবে না।
এসআর
মন্তব্য করুন: