পবিত্র কোরআনের অর্ধেক বলা হয়েছে সুরা যিলযালকে। সাহাবি
হজরত আনাস ও ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) সুরা যিলযালকে কোরআনের অর্ধেক, সুরা ইখলাসকে এক তৃতীয়াংশ এবং সুরা কাফিরূনকে এক চতুর্থাংশ বলেছেন। (মাযহারী, তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন, ৮/৮৪৩)
ভূমিকম্প ও কিয়ামতের বর্ণনা:
সুরার প্রথম আয়াতে কিয়ামতের শুরু এবং সেই মুহূর্তের ভূমিকম্পের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, যখন শিঙ্কায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে, তখন পুরো পৃথিবী কেঁপে উঠবে এবং সব কিছু চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ফুঁৎকারে মাটির নিচে থাকা মৃতরা, খনিজ পদার্থ এবং গুপ্ত ধনসমূহকে জমিন বের করে এনে হাশরের মাঠের দিকে চালিত করবে। কিছু মুফাসসিরের মতে, সোনা, রূপা, হীরা, মণি-মাণিক্য এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদও সেদিন জমিন উগলে দেবে।
পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, ফুঁৎকারের পর মানুষ পুনরায় জীবন লাভ করে চেতনা ফিরে পাওয়ার সাথে সাথেই প্রতিক্রিয়া করবে—“এগুলো কি হচ্ছে?” এবং পরে বুঝবে এটি হাশরের দিন।
পৃথিবী সাক্ষী:
নবীজি (সা.) বলেছেন, “মাটি মানুষের সব কাজের সাক্ষী দেবে। নারী বা পুরুষ মাটির উপর যা কিছু করেছে, মাটি তা বলবে এবং আল্লাহ তায়ালা সেই দিন মাটিকে কথা বলার শক্তি দেবেন।”
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৩৭৪)
সুরা যিলযাল (আরবি):
اِذَا زُلۡزِلَتِ الۡاَرۡضُ زِلۡزَالَہَا ۙ ١ وَاَخۡرَجَتِ الۡاَرۡضُ اَثۡقَالَہَا ۙ ٢ وَقَالَ الۡاِنۡسَانُ مَا لَہَا ۙ ٣ یَوۡمَئذٍ تُحَدِّثُ اَخۡبَارَہَا ۙ ٤ بِاَنَّ رَبَّکَ اَوۡحٰی لَہَا ؕ ٥ یَوۡمَئذٍ یَّصۡدُرُ النَّاسُ اَشۡتَاتًا ۬ۙ لِّیُرَوۡا اَعۡمَالَہُمۡ ؕ ٦ فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَہٗ ؕ ٧ وَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ شَرًّا یَّرَہٗ ٪
অর্থ:
“যখন পৃথিবীকে কম্পনে ঝাঁকিয়ে দেওয়া হবে এবং মাটি তার ভার বের করে দেবে। মানুষ বলবে, ‘তার কী হল?’ সে দিন পৃথিবী তার যাবতীয় সংবাদ জানাবে, কারণ প্রতিপালক তাকে সেই আদেশ দেবেন। মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে এবং তাদের কৃতকর্ম দেখানো হবে। সুতরাং অণু পরিমাণ সৎকর্ম বা অসৎকর্মের ফল প্রত্যেকেই দেখতে পাবেন।”
এসআর
মন্তব্য করুন: