[email protected] রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

স্বামী ঠিকমতো খরচ না দিলে স্ত্রী কী করবেন?

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ৭:২০ এএম

ইসলাম স্বামীকে পরিবার—বিশেষত স্ত্রী ও সন্তানের ন্যায্য ভরণপোষণ

দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে কার্পণ্য করা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়। এমনকি কোনো স্বামী যদি স্ত্রী-সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে উদাসীন থাকে, তবে শরিয়ত স্ত্রীকে সীমার ভেতর প্রয়োজনীয় ব্যয় স্বামীর অগোচরে নেওয়ার অনুমতিও দিয়েছে।

ভরণপোষণের নির্দেশনা হাদিসে

বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের হক সম্পর্কে বলেন—স্বামীর দায়িত্ব হলো তাদের ভরণপোষণ, পোশাক এবং সৌন্দর্যচর্চার প্রয়োজনগুলো শোভন আচরণের মাধ্যমে পূরণ করা। (ইবনে মাজাহ)

এর অর্থ হলো, পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে স্ত্রী ও সন্তানের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা প্রত্যেক স্বামীর জন্য ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক।

কৃপণতা গুরুতর গুনাহ

যদি স্বামী ধনী হয়, কিন্তু পরিবারের খরচে কার্পণ্য করে, তবে তা কঠোরভাবে নিন্দিত। সহিহ হাদিসে এসেছে—প্রতিদিন দুই ফেরেশতা দোয়া করেন: একজন বলেন, “হে আল্লাহ! দাতা মানুষকে আরও দিন,” আর অন্যজন বলেন, “হে আল্লাহ! কৃপণ ব্যক্তিকে ধ্বংস করুন।” (বুখারি ও মুসলিম)

আরেক হাদিসে আল্লাহ বলেন—“হে বান্দা! তুমি ব্যয় করো, আমি তোমার জন্য ব্যয়ের দরজা খুলে দেব।” (বুখারি ও মুসলিম)

পরিবারের জন্য খরচ—সর্বোচ্চ সওয়াবের কাজ

পরিবারের খরচকে নবী (সা.) অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সহিহ মুসলিমে বলা আছে—আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যেকোনো জায়গায় ব্যয় করা ভালো, কিন্তু স্ত্রী-সন্তানের জন্য খরচ করা দিরহামের সওয়াব সবচেয়ে বেশি।

স্বামী ব্যয় না করলে স্ত্রীর করণীয়

স্বামী যদি কৃপণতার কারণে প্রয়োজনীয় ভরণপোষণ না দেন, তবে শরিয়ত স্ত্রীকে স্বামীর সম্পদ থেকে ন্যায্য পরিমাণ নেওয়ার অনুমতি দেয়।

হাদিসে হিন্দ বিনতে উতবা অভিযোগ করলে যে আবু সুফিয়ান যথেষ্ট খরচ দেন না, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“তোমার ও তোমার সন্তানের প্রয়োজন অনুযায়ী ন্যায্য পরিমাণ স্বামীর সম্পদ থেকে নিতে পারো।” (বুখারি ও মুসলিম)

ইসলামের শিক্ষা: উদারতা ও দায়িত্বশীলতা

ইসলাম বলে—আল্লাহ যে সম্পদ দান করেছেন, তার প্রভাব নিজের জীবনে এবং পরিবারের ওপরও প্রকাশ পাওয়া উচিত। বিদ্বান আবু বকর দাক্কাক (রহ.) বলেন, তাওয়াক্কুল হলো আগামী দিনের দুশ্চিন্তা না করা এবং আজকের প্রয়োজনের ওপর ভরসা রাখা।

তাই পরিবারের প্রয়োজন বোঝা, যথাযথ ব্যয় করা এবং স্ত্রী-সন্তানের অধিকার আদায় করা শুধু দায়িত্ব নয়—এটি ইবাদতও।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর