[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তায় টিকটকের বিনিয়োগকারীরা

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:১২ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। চীনা

মালিকানাধীন এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মার্কিন কার্যক্রম বিক্রির সময়সীমা আরও একবার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে আগ্রহী মার্কিন বিনিয়োগকারীরা আপাতত অপেক্ষার অবস্থানে রয়েছেন।

টিকটক কিনতে আগ্রহ দেখানো ধনকুবের বিনিয়োগকারী ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককোর্ট জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি কী দিকে যায় তা দেখেই তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সুযোগ এলে তারা এগোতে প্রস্তুত। তার ভাষ্য অনুযায়ী, বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ইতোমধ্যে জোগাড় করা হয়েছে, এখন সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস একটি আইন পাস করে, যেখানে বলা হয়—চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি করতে হবে। তা না হলে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করা হবে। আইনপ্রণেতাদের আশঙ্কা, বাইটড্যান্সের সঙ্গে চীনা সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তিতে এই আইন অনুমোদন পায়।

টিকটক ও বাইটড্যান্স শুরু থেকেই এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তাদের দাবি, ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্বে থাকাকালে এই আইনে স্বাক্ষর করেন এবং ২০২৫ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টও আইনটি বহাল রাখে।

তবে বাস্তবতায় বিক্রির নির্ধারিত সময়সীমা একাধিকবার পেছানো হয়েছে। সর্বশেষ জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও সময় বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা হবে পঞ্চম দফা। হোয়াইট হাউস সূত্রে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এর আগে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, টিকটক বিক্রি নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে এবং এতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সম্মতি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই চুক্তির কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। ট্রাম্প সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে ওরাকলের ল্যারি এলিসন ও ডেলের মাইকেল ডেলের নামও উল্লেখ করেছিলেন।

অক্টোবরে ট্রাম্প ও শির বৈঠকে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও আলোচনার পর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। চীন সরকার বা বাইটড্যান্স—কেউই বিক্রির অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

এ অবস্থায় বিশ্লেষকদের ধারণা, বিক্রির সময়সীমা আবারও বাড়তে পারে, কারণ এখনো দৃশ্যমান কোনো সমাধান নেই।

ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককোর্ট মনে করেন, টিকটকের মতো শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম সীমিত কয়েকজনের হাতে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ। তার বিনিয়োগকারী দলে রয়েছেন রেডিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্সিস ওহানিয়ান এবং কানাডীয় বিনিয়োগকারী কেভিন ও’লিয়ারি।

ম্যাককোর্ট জানান, তিনি চান টিকটক আইন মেনে পরিচালিত হোক—হোক তা বিক্রির মাধ্যমে, অথবা প্রয়োজনে বন্ধ করে। তিনি আরও বলেন, চীনা প্রযুক্তি ছাড়াই টিকটক চালানোর পক্ষে তিনি এবং বিতর্কিত রিকমেন্ডেশন অ্যালগরিদম বাদ দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। তার উদ্যোগ ‘প্রজেক্ট লিবার্টি’ বিকল্প প্রযুক্তি তৈরি করেছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সব মিলিয়ে টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি, আর সেই অনিশ্চয়তার মধ্যেই দিন গুনছেন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর