কী জেতেননি লিওনেল মেসি! সম্ভবত সবই জিতেছেন। বোধ হয়, দলগত ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে এমন কোনো মর্যাদাবান পদক বা সম্মাননা বাকি নেই, যা পাননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। দলীয়ভাবে বিশ্বকাপ, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ, ফিনালিসিমা, ঘরোয়া লিগ শিরোপা—সবই তার ঝুলিতে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যালন ডি'অর, ফিফা দ্য বেস্ট, গোল্ডেন বল, গোল্ডেন বুটসহ অর্জনের মুকুটে সংযোজন হয়েছে অসংখ্য রত্ন।
অন্য কেউ হলে এত ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে ধরতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তেন, হয়তো পুরস্কার মঞ্চে উঠা-নামা করতে করতে বিরক্ত হয়ে যেতেন। কিন্তু মেসি ভিন্ন ধাঁচের। ট্রফি দেখলেই তার চোখে এক অন্য আলো জ্বলে ওঠে। সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন নতুন কোনো শিরোপার পেছনে।
এবার মেসির সামনে অপেক্ষা করছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ—ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। আর্জেন্টাইন তারকার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এখন এই আন্তর্জাতিক মর্যাদার শিরোপার দিকেই। অবশ্য এটি তার প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ নয়। বরং তিনি আগেও তিনবার (২০০৯, ২০১১ ও ২০১৫ সালে) ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন বার্সেলোনার হয়ে। তবুও তৃষ্ণা তার মিটে যায়নি, বরং আরও নতুন রেকর্ডের খোঁজে নেমেছেন।
বাংলাদেশ সময় আগামীকাল রোববার (১৫ জুন) সকাল ৬টায় পর্দা উঠছে ক্লাব বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। ৩২টি ক্লাব অংশ নিচ্ছে এবারের আয়োজনে। উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে মেসির দল ইন্টার মিয়ামি। তাদের প্রতিপক্ষ মিশরের ক্লাব আল আহলি। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে।
মাঠে নামার আগে ফিফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন ৩৭ বছর বয়সী মেসি। তিনি বলেন, "এটা একটি দারুণ প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নিতে পারাটা রোমাঞ্চকর। আমি যখন অন্য দলে খেলতাম, তখন আমার প্রত্যাশা ছিল ভিন্ন। তবে আমি উচ্ছ্বসিত এবং বিশ্বের সেরা দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলার অপেক্ষায় আছি।"
২০২৩ সালে মিয়ামিতে যোগ দেওয়ার পর মেসি এমএলএসে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তার দল ইন্টার মিয়ামি রেকর্ড ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘সাপোর্টারস শিল্ড’ জিতে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলপ্রেমীদের ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে উদ্দীপনা সম্পর্কে মেসি খুব ভালো করেই জানেন।
তিনি বলেন, "আমি মনে করি, সারা পৃথিবী থেকে অনেক বড় বড় দল আসছে এবং সেটা অনেক মানুষকে আকৃষ্ট করবে। আমরা এমন সব দলের কথা বলছি, যাদের দলে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রয়েছে— যাদের খেলা সবাই দেখতে ভালোবাসে। যুক্তরাষ্ট্রে সেরা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে খেলা দেখার সুযোগ— এটা সত্যিই অসাধারণ।"
দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর একসঙ্গে একই শিরোপার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাটাকেই বিশেষ কিছু হিসেবে দেখেন মেসি। তার ভাষায়, "তাদের বিপক্ষে খেলাটা দারুণ সুযোগ ও দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। খেলোয়াড়দের জন্য মাঠে আর দর্শকদের জন্য গ্যালারিতে— সবার জন্যই এটা চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা।"
এসআর
মন্তব্য করুন: