[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বদ নজর থেকে রক্ষায় সন্তানদের যে উপদেশ দিয়েছিলেন ইয়াকুব (আ.)

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১:৩৫ পিএম

নবী ইয়াকুব (আ.)-এর ১২ সন্তান ছিলেন। তাদের মধ্যে ইউসুফ ও

বিন ইয়ামিন ছিলেন ভিন্ন মাতৃকন্যা, এবং তারা ছোটতম। ইয়াকুব (আ.) বিশেষভাবে এই দুই সন্তানকে বেশি স্নেহ করতেন। বড় ভাইরা এটি ঈর্ষার চোখে দেখতেন এবং ইউসুফকে বাবার দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত করতে জঙ্গলে কূপে ফেলে।

পরবর্তীতে এক বণিক কাফেলা ইউসুফকে উদ্ধার করে মিসরের বাদশার কাছে বিক্রি করে। রাজপ্রাসাদ থেকে জেলে যাওয়ার পর, পরে তিনি মিসরের রাজদরবারে গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পান।

মিসরে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ইউসুফ (আ.)-এর বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলে জনগণকে খাদ্যশস্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই খবর পেয়ে ইয়াকুব (আ.) তার ১০ সন্তানকে মিসরে পাঠান। সেখানে ইউসুফ (আ.) ভাইদের চিনতে পেরেছিলেন, কিন্তু ভাইরা তাকে চিনতে পারেননি।

ইউসুফ (আ.) খাদ্য বিতরণ করার সময় ভাইদের একবারে খুব বেশি খাদ্য দেয়নি। তার নিয়ম ছিল, একজনকে এক উটের বোঝার বেশি খাদ্য দেয়া হতো না। এরপর তিনি তাদের বলেন, পরের বার খাদ্য নিতে গেলে ছোট ভাই বিন ইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। যদি সে সঙ্গে না আসে, তবে কেউ খাদ্যশস্য পাবেনা।

প্রথমে ইয়াকুব (আ.) বিন ইয়ামিনকে পাঠাতে রাজি হননি, কিন্তু পরে আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে তিনি তাকে ভাইদের সঙ্গে মিসরে পাঠান। যেহেতু ১১ ভাই সুদৃঢ় ও সুস্থ যুবক ছিলেন, ইয়াকুব (আ.) তাদের সতর্ক করেছিলেন যেন বদ নজর থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তিনি উপদেশ দেন—
“তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না, বরং ভিন্ন ভিন্ন দরজা ব্যবহার করবে। আল্লাহর ইচ্ছার বিপরীতে আমি তোমাদের জন্য কিছু করতে পারি না; হুকুমের মালিক আল্লাহ।”
(সূরা ইউসুফ, আয়াত ৬৭)

মুফাসসিরদের মতে, ইয়াকুব (আ.) এর এই নির্দেশনার মূল কারণ ছিল— সুস্থ, সুন্দর ও রূপশালী যুবকদের একসাথে দেখলে কোনো বদ নজর বা হিংসাপরায়ণ মানুষের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

শিক্ষণীয় বিষয়:

অতিমাত্রায় প্রদর্শনী ও মানুষের নজরে আসা এড়িয়ে চলা উচিত।

বদ নজর থেকে বাঁচতে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া জরুরি। রাসুল (সা.) বলেছেন, “বদ নজরের প্রভাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর; কারণ নজরের প্রভাব সত্য।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৫০৮)

 

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর