[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পোস্টমর্টেম কি শরিয়তে জায়েজ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ৬:৫৯ পিএম

সংগৃহীত ছবি

মেডিকেল শিক্ষার প্রয়োজনে মানবদেহের পোস্টমর্টেম বা অ্যানাটমিক্যাল ডিসেকশন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।

তবে মানুষের দেহ কাটাছেঁড়া করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না—এ নিয়ে প্রশ্ন পাঠিয়েছেন জামালপুরের আবু সাঈদ।

উত্তর : সাধারণ অবস্থায় পোস্টমর্টেম বৈধ নয়

শরিয়তে মৃতদেহের সম্মান রক্ষা করা অপরিহার্য। কুরআনে বলা হয়েছে—
“আমি আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি।” (সূরা বনি ইসরাইল, ৭০)
এ সম্মান জীবিত অবস্থার মতো মৃত্যুর পরও বহাল থাকে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“মৃত ব্যক্তির হাড় ভাঙা জীবিত অবস্থায় তার হাড় ভাঙার মতোই।” (আবু দাউদ, ৩২০৭)
এ হাদিস স্পষ্ট করে যে মৃতদেহের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ নিষিদ্ধ।

তবে অনিবার্য প্রয়োজন হলে অনুমোদিত

শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো—
“অনিবার্য প্রয়োজন নিষিদ্ধকে অনুমোদনযোগ্য করে তোলে।”

আধুনিক চিকিৎসা শিক্ষা, সার্জারি শেখা, রোগের প্রকৃতি নির্ণয় এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মানবদেহের ডিসেকশন অনেক ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কেবল ডামি বা পশুর দেহ ব্যবহার করে সব শিক্ষা সম্ভব নয়।
সুতরাং শর্তসাপেক্ষে পোস্টমর্টেম বৈধ।

যে শর্তগুলো মানা জরুরি

১. মৃতব্যক্তির অনুমতি বা ওয়ারিশের সম্মতি

  • জীবদ্দশায় মৃতব্যক্তি অনুমতি দিয়ে থাকলে উত্তম।
  • অনুমতি না থাকলে ওয়ারিশদের সম্মতি আবশ্যক।

২. প্রয়োজনের সীমা অতিক্রম না করা

  • শিক্ষা বা গবেষণার প্রয়োজনে যতটুকু প্রয়োজন, কেবল ততটুকুই কাটাছেঁড়া করা যাবে।
  • অতিরিক্ত বা অযথা ছেদন–বিচ্ছেদন হারাম।

৩. লজ্জাস্থান রক্ষা ও লিঙ্গভেদে সতর্কতা

  • নারী মৃতদেহ হলে সম্ভব হলে নারী শিক্ষক বা শিক্ষার্থী ডিসেকশন করবে।
  • প্রয়োজনে পুরুষ করলেও বৈধ, তবে শালীনতা বজায় রাখতে হবে।
  • সুতরাং ডামি বা পশুর দেহ যথেষ্ট না হলে, এবং উপরের শর্তগুলো পূরণ করা হলে, মেডিকেল শিক্ষার প্রয়োজনে মানবদেহের পোস্টমর্টেম বা অ্যানাটমিক্যাল ডিসেকশন শরিয়তসম্মতভাবে বৈধ হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর