সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকায় তাকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে রবিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট (টিজি-৩৩৯) যোগে ঢাকায় পৌঁছান সাবেক রাষ্ট্রপতি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি হুইলচেয়ারে করে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘ সময় তিনি অপেক্ষমাণ ছিলেন এবং তাকে শারীরিকভাবে কিছুটা ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে রাত প্রায় ৩টার দিকে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
আবদুল হামিদ এর আগে চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য দেশ ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার এবং শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান। জানা গেছে, দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ গিয়েছিলেন।
তবে তার এই দেশত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। জানা যায়, আবদুল হামিদ দেশ ছাড়ার পেছনে সহযোগীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জের সদর মডেল থানায় গত ১৪ জানুয়ারি একটি মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ১২৪ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রথম দফায় শপথ নেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তিনি।
মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে। এরপর তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসায় বসবাস শুরু করেন।
এ ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: