বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং ছাত্র-জনতার টানা আন্দোলনের মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
শনিবার (১০ মে) রাত ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীও অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে যোগ দেন।
পরদিন শুক্রবার (৯ মে) জুমার নামাজের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিশাল জমায়েত হয়। সেখানে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি জানিয়ে আন্দোলনকারীরা আলটিমেটাম দেন। বিকালে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
এ অবস্থায় বিকেলেই সরকার এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ওঠা স্বৈরাচার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়া, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছাত্রলীগকে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। একইসঙ্গে, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার কথাও উল্লেখ করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রা ও তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়েও জনমনে থাকা ক্ষোভ সম্পর্কে সরকার অবগত এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়।
সবশেষে শনিবার শাহবাগ মোড় অবরোধের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের চাপ আরও বাড়ে, যার প্রেক্ষিতে রাতেই জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: