গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন।
পরবর্তীতে তিনি ভারতে চলে যান।
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার গুম, খুন, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে।
এসব ঘটনার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম এখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে রয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জুলাই মাসে সংঘটিত অভ্যুত্থানে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সরাসরি গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তদন্ত প্রতিবেদনে এসব ঘটনার সত্যতা উঠে এসেছে এবং দাবি করা হয়েছে যে, তৎকালীন সরকারপ্রধানের নির্দেশেই এসব হামলা চালানো হয়েছিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক গোষ্ঠী দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে, অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়া উচিত।
আসন্ন ডিসেম্বরের সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে বিবিসি বাংলা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।
বিবিসি বাংলা: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা যাচ্ছে। আপনার অবস্থান কী?
প্রধান উপদেষ্টা: আমরা বরাবরই ঐকমত্যের পক্ষে। সবাই মিলে যা ঠিক করবে, আমরা তাই করব।
বিবিসি বাংলা: তাহলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে নাকি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে?
প্রধান উপদেষ্টা: আমি নির্দিষ্টভাবে কিছু বলছি না। আমাদের সবার এই দেশে সমান অধিকার রয়েছে। কেউ যদি রাজনীতি করতে চায়, তা করতে পারবে। তবে যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হবে।
বিবিসি বাংলা: বর্তমান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আপনার নিয়মিত যোগাযোগ হয়?
প্রধান উপদেষ্টা: যখন প্রয়োজন হয়, তখনই যোগাযোগ করি।
বিবিসি বাংলা: অতীতে আপনি রাজনৈতিক দল গঠনের কথা বলেছিলেন, কিন্তু রাজনীতিতে যাননি। এখন দেশের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আপনি কি মনে করেন, আপনার এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল?
প্রধান উপদেষ্টা: আমি রাজনীতি করিনি এবং ভবিষ্যতেও করব না। আমাকে অনুরোধ করা হয়েছিল, তাই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। তবে আমি রাজনীতির অংশ নই।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছে এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সূত্র - বিবিসি বাংলা
এসআর
মন্তব্য করুন: