ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে আব্দুল হান্নান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আটক ব্যক্তি ওই মোটরসাইকেলের নিবন্ধিত মালিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিএমপির তথ্যমতে, এর আগে র্যাব ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করে। পরে বিআরটিএ থেকে যাচাই করে মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে আব্দুল হান্নানের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এরপর তাকে আটক করে র্যাব পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, “এই হত্যাচেষ্টা মামলায় আব্দুল হান্নানের কোনো সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে শুটারকে শনাক্ত করা হয়েছে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযুক্তরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে—এমন কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। হত্যাচেষ্টার পেছনের উদ্দেশ্য তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটিত হবে বলেও জানান তিনি।
ভোটের মাঠে থাকা প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব-২-এর অধিনায়ক মো. খালিদুল হক হাওলাদার জানান, হাদির ওপর গুলিবর্ষণের সময় যে মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভিডিও ফুটেজ থেকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করা হয়। মোটরসাইকেলটির নম্বর ৫৪-৬৩৭৫, যা বিআরটিএর নথি অনুযায়ী আব্দুল হান্নানের নামে নিবন্ধিত।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হান্নান পরস্পরবিরোধী ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। কখনো দাবি করেছেন মোটরসাইকেলটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন, আবার কখনো বলেছেন সেটি গ্যারেজে ছিল। তবে এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
র্যাব জানায়, আটক হান্নান প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদকে চেনেন বলে স্বীকার করলেও দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছেন। তবে র্যাব কর্মকর্তাদের মতে, ফয়সাল তার পূর্বপরিচিত ও ঘনিষ্ঠজন। এছাড়া হান্নানের কোনো নির্দিষ্ট পেশার তথ্যও পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের ধারণা, তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুলির ঘটনায় পলাতক ফয়সাল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ কারণে তাকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে থানায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশায় করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
এসআর
মন্তব্য করুন: