[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৩৪ এএম

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত শহীদ

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার পর তিনি স্মৃতিসৌধে উপস্থিত হয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর সম্মান জানান। এরপর তিনি কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁদের আত্মত্যাগ স্মরণ করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক গভীর বেদনাবিধুর অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগে, পরিকল্পিতভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকে মেধাশূন্য করে দেওয়া।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা এই হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুই দিন আগে, ওই রাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী ও সংস্কৃতিসেবীদের চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন সকালে মিরপুর ও রায়েরবাজারের বিভিন্ন স্থানে তাঁদের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল, আবার অনেককে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। এই নিষ্ঠুর ঘটনা গোটা জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।

বিভিন্ন ঐতিহাসিক নথি, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক গবেষণায় পাওয়া তথ্যে জানা যায়, এই হত্যাকাণ্ডে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০ জন। তাঁরা বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামে মেধা, চিন্তা ও লেখনীর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

যদিও ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়, তবে এই হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল ১০ ডিসেম্বর থেকে। কয়েক দিন ধরে তালিকা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রথম স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয় ঢাকার মিরপুরে। পরে ১৯৯১ সালে রায়েরবাজারে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর দেশজুড়ে গভীর শোকের মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জাতি তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর