বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, নিকট ভবিষ্যতে ব্যাংক সুদহার কমানো হতে পারে, তবে এর জন্য মূল্যস্ফীতিকে ৭ শতাংশের নিচে নামানো জরুরি।
আপাতত রেপো সুদহার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক পরামর্শক, গবেষণা পরিচালক, মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্র উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, “মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি। বর্তমানে এটি সাড়ে ৮ শতাংশের ঘরে অবস্থান করছে। আমাদের লক্ষ্য এটিকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা। সেটি না হওয়া পর্যন্ত আমি সন্তুষ্ট নই।”
তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দুটি কৌশল নেওয়া হয়— সরবরাহ ও চাহিদা-ভিত্তিক। প্রথমে চাহিদা কমাতে সুদহার বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে ব্যাংক ঋণ এবং বাজারে তারল্য হ্রাস পেয়েছে। একইসঙ্গে সরকারও ব্যয় সংকোচনের নীতি গ্রহণ করেছে।
ড. মনসুর আরও বলেন, “সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতেও আমরা কাজ করেছি। যদিও ডলারের সংকট ছিল, তবু বিদ্যুৎ, সার ও এলএনজি খাতে আমদানিতে কোনো বিঘ্ন ঘটতে দিইনি। ডলার রেট প্রথমে ১২২ টাকা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আশঙ্কা করেছিল রেট ১৬০-১৭০ টাকায় পৌঁছাবে, তবে তা হয়নি।”
গভর্নর সুদহার কমানোর শর্ত হিসেবে বলেন, “যখন মূল্যস্ফীতি নীতিগত সুদহারের (পলিসি রেট) ৩ শতাংশ নিচে নেমে আসবে, তখন আমরা সুদহার পুনর্বিবেচনা করব। বর্তমানে রেপো রেট ১০ শতাংশ, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামলে আমরা সুদহার কমানোর কথা ভাবতে পারব।”
তিনি জানান, ইতোমধ্যেই সুদের হারে কিছুটা নিম্নমুখিতা দেখা যাচ্ছে। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার ১২ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে এসেছে। ওভারনাইট রেটও সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে, যাতে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ রেখে উচ্চ মুনাফা অর্জন করতে না পারে। বরং বিনিয়োগেই যেন ব্যাংকগুলো মুনাফা করে— সেটাই লক্ষ্য।
গভর্নর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন একটি সুসংহত ও কার্যকর কৌশল অনুসরণ করছে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: