[email protected] মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫
২১ শ্রাবণ ১৪৩২

ভোটকেন্দ্র স্থাপনে ডিসি-ইউএনওদের নেতৃত্বে কমিটি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২৫ ৯:১৫ পিএম

সংগৃহীত ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নেতৃত্বে গঠিত কমিটি বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এ সংক্রান্ত নীতিমালার সংশোধিত সংস্করণ ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা–২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

নতুন এই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, এখন থেকে ভোটকেন্দ্র স্থাপনসংক্রান্ত পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ইসির নিজস্ব মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। ফলে নির্বাচনী কাঠামোতে ইসির কর্তৃত্ব আরও জোরালো হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কেন এই পরিবর্তন?

এর আগে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন ভোটকেন্দ্র স্থাপন প্রক্রিয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের যুক্ত করেছিল। ওই সময় ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি সংশোধনী এনে ইউএনওকে আহ্বায়ক করে উপজেলা পর্যায়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এবং ডিসিকে প্রধান করে জেলা পর্যায়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির খসড়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে মতামতসহ নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর নিয়ম ছিল।

তবে প্রশাসননির্ভর ওই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি। বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সে কারণে বর্তমান কমিশন সেই কাঠামো থেকে সরে এসে পুনরায় ভোটকেন্দ্র স্থাপনের নিয়ন্ত্রণ ইসির অধীনস্ত নির্বাচন কর্মকর্তাদের হাতে ফিরিয়ে দিল।

নতুন নীতিমালায় কী থাকছে?

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে—

  • গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
  • গড়ে ৫০০ পুরুষ ভোটার এবং ৪০০ নারী ভোটার মিলে একটি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করতে হবে।
  • বিদ্যমান ভোটকেন্দ্র যদি নদীভাঙন বা অন্য কারণে বিলুপ্ত বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে, তাহলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
  • একইভাবে ভোটার সংখ্যা বেড়ে গেলে নতুন কেন্দ্র স্থাপনেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের মতামত নিতে হবে।

কেন্দ্র স্থাপনে দূরত্ব ও ভৌগোলিক বিবেচনা

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে—

  • ভোটারদের যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
  • দুটি কেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব যেন তিন কিলোমিটারের বেশি না হয়।
  • পাশাপাশি, কোনো একটি কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি আরেকটি কেন্দ্র স্থাপন না করতেও বলা হয়েছে।
  • কোনো ভোটার যেন তার নিজ এলাকার কেন্দ্র পেরিয়ে দূরবর্তী কেন্দ্রে যেতে বাধ্য না হয়—সেটি নিশ্চিত করাও জরুরি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

উপসংহার:
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ভোটকেন্দ্র স্থাপন কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ সরাসরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ফিরিয়ে আনা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার এক বড় পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর