আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি—গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলার অকুতোভয় সন্তানরা বুকের রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত করেছিলেন, সৃষ্টি করেছিলেন অনন্য ইতিহাস।
ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল।
তবে স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণের প্রশ্নটি যথাযথভাবে গুরুত্ব পায়নি। এখনো ভাষাসংগ্রামীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চূড়ান্ত হয়নি।
একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ভাষাশহিদদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। যারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের নাম ও অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি।
ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও স্থাপনাগুলোও সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে।
সব ভাষাশহিদের কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, অনেক স্থান সংরক্ষণের বাইরে রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতিহাস সংরক্ষণে যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগের অভাবে অনেক মূল্যবান নিদর্শন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে ধরে রাখতে নানা দাবি উঠেছে। ২০১০ সালে হাইকোর্টে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ভাষাসৈনিকদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হলেও, ২০১২ সালে প্রকাশিত তালিকা নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে। এরপর আর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
ভাষাশহিদদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ ও তাদের স্মৃতি সংরক্ষণে গবেষণা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভাষাশহিদদের কবর সংরক্ষণ, স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস তুলে ধরার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন আলোচনা সভায় বক্তারা ভাষাশহিদ ও সংগ্রামীদের তালিকা চূড়ান্তকরণের আহ্বান জানিয়েছেন।
তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হলে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, না হলে এই গৌরবময় অধ্যায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: