[email protected] মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫
২১ শ্রাবণ ১৪৩২

গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা রাজনৈতিক দলগুলো ধারণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে: আসিফ মাহমুদ

এম. এ. রনী

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ৭:০৩ পিএম
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ৭:১১ পিএম

.

গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস পূর্তি উপলক্ষে "অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল্যায়ন" শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও তরুণদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জোরালোভাবে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্লেষণ করেন।

 

তিনি বলেন, "এই গণঅভ্যুত্থানের যে স্পিরিটের জন্য তরুণরা রাজপথে নেমেছে, জীবন দিয়েছে, তাদেরকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। কেননা, যে রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা থেকে জীবন দেওয়া, আহত হওয়া, হাত হারানো, পা হারানো কিংবা চোখ হারানো, সেই আকাঙ্ক্ষা দুঃখজনকভাবে কোনো রাজনৈতিক দল সম্পূর্ণরূপে ধারণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।"

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেই তিন মাস আগে তরুণদের উদ্যোগে শুরু হয় গণঅভ্যুত্থান। এই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল সামগ্রিক রাজনৈতিক সংস্কার, দুর্নীতির অবসান, এবং সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। আন্দোলনে তরুণদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। তবে এই সংগ্রামের মূল্য দিতে হয়েছে প্রাণ দিয়ে, কেউ কেউ হারিয়েছেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, আবার কেউ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে জীবনের নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন।

 

আলোচনায় উঠে আসে, তরুণরা শুধুমাত্র রাজপথে সক্রিয় থাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে তাদের আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থেকে যাবে। তরুণদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, যাতে তাদের চেতনা এবং দাবি-দাওয়া একটি কার্যকর কাঠামোর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে পারে।

বক্তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলই এই আন্দোলনের মূল চেতনা ও দাবিগুলোকে যথাযথভাবে ধারণ করতে পারছে না। এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেও গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।

 

আলোচনায় বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান। তারা বলেন, সরকার কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও অনেক ক্ষেত্রেই গণঅভ্যুত্থানের দাবিগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে, তরুণদের সুনির্দিষ্ট দাবি যেমন শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থার সংস্কার, নিরাপদ পরিবেশ, এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এখনও কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

 

আলোচনার এক পর্যায়ে জনাব আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, "তরুণদের কণ্ঠস্বর দমন নয়, বরং তাদেরকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করা এখন সময়ের দাবি। যদি তারা নিজেদের দাবি আদায়ে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত না হয়, তবে তাদের এই আত্মত্যাগ অমূল্য থেকে যাবে।"

আলোচকরা আশা প্রকাশ করেন, গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ও তরুণদের আন্দোলন আগামী দিনে একটি কার্যকর রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ নেবে। এছাড়া তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তরুণদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

 

এই আলোচনা তরুণ সমাজ এবং দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নতুন করে ভাবতে এবং কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর