বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটিতে নামানোর
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে না। হাইকোর্ট যে রায়ে এ গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল, আপিল বিভাগ সেই রায়ই বহাল রেখেছে।
বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনের লিভ টু আপিল খারিজ করে এই নির্দেশ দেন।
রিটকারীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। ইসির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী। শুনানি শেষে ব্যারিস্টার জাকির বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল করায় এখন নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাগেরহাটের চারটি আসন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে গাজীপুরের পাঁচটি আসনও আগের মতোই থাকবে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি আসনে ভোট হয়ে আসছে। পুরোনো বিভাজন অনুযায়ী—
বাগেরহাট-১: চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট
বাগেরহাট-২: সদর ও কচুয়া
বাগেরহাট-৩: রামপাল ও মোংলা
বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত ৩০ জুলাই ইসি বাগেরহাটের চারটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দিলে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ নিয়ে গঠিত হয় সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি, যারা হরতাল–অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন এবং কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয়। তাদের দাবি ছিল—আসন সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত জনস্বার্থবিরোধী।
তবু ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে তিনটি আসন নির্ধারণ করে। সেখানে যে নতুন বিন্যাস করা হয়েছিল তা হলো—
বাগেরহাট-১: সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট
বাগেরহাট-২: ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা
বাগেরহাট-৩: কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও জেলা ট্রাক মালিক সমিতি—এমন একাধিক সংগঠন দুটি রিট দায়ের করে। রিটে সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান কেন চারটি আসন বহাল রাখা হবে না এবং ইসির নতুন গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। অবশেষে ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট গেজেট বাতিল করে পুরোনো চারটি আসন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট জারি করার আদেশ দেন, যার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল করেছিল। আজ আপিল বিভাগ সেই আপিল নাকচ করায় পুরোনো চারটি আসনই বহাল থাকছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: