জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
রোববার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার চাই।
গুম-খুনের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল, তা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে এই বিচার প্রয়োজন।"
এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও আসামি। মামলার আরেক আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে এখন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সহযোগিতা করছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়। এর পরেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হয় মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলা। ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ অনুযায়ী অভিযোগ করা হয় তিনজনের বিরুদ্ধে।
১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল এবং ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগে ৮১ জন সাক্ষী, ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র, ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ এবং ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার শহীদ তালিকা রয়েছে।
দেশ ছাড়ার পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। আদালতের নির্দেশে তাকে পলাতক ঘোষণা করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এই মামলার বাইরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা চলমান। এর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ শাসনামলে গুম-খুনের অভিযোগ এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলা।
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের একাধিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই অভিযোগগুলো দুইটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের লক্ষ্যে আইন সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
এসআর
মন্তব্য করুন: