আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আয়োজন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটে তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন এবং মাথার হেলমেট ও এক হাতের হ্যান্ডকাপ খোলা হয়।
রিমান্ড শুনানির সময় শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন এবং রিমান্ডের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় কাঠগড়ায় দুই হাতে ভর দিয়ে মলিন মুখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন নুরুল হুদা।
এর আগে গত রোববার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি পরিহিত নুরুল হুদাকে জনতা গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করছে এবং জুতা দিয়ে আঘাত করছে।
পরদিন (২৪ জুন) আদালত তার চার দিনের প্রথম দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ জুন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন করেছে।
পরে ২৫ জুন মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ–এর ধারা যুক্ত করা হয়।
মামলায় মোট তিনজন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করা হয়েছে—
২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ
২০১৮ সালের নির্বাচনের সিইসি কে এম নুরুল হুদা
২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল
এছাড়াও আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক ছয় পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি)—
হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ এবং বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এসআর
মন্তব্য করুন: