সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সম্প্রতি সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে, তাঁর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য। শুধু তিনিই নন, তাঁর সঙ্গে আরও ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি—যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, উচ্চপদস্থ আমলা ও সেনা কর্মকর্তারা—তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ও যাচাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জামুকার ৯৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জামুকার চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের আবেদনপত্র, পূর্ববর্তী তদন্ত প্রতিবেদন, গেজেট ও অন্যান্য প্রামাণিক নথি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী জানান, “ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফরম প্রকাশ করা হয়েছে। গণমাধ্যম ও সরাসরি আবেদন থেকেও অনেক অভিযোগ আসছে।”
যাঁদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সনদের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:
এছাড়া তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন ও মীর শওকত আলী বাদশা, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন, অতিরিক্ত সচিব তড়িৎ কান্তি রায়, সাবেক আইজিপি আবদুর রহিম খান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির, ক্যাপ্টেন আনারুল ইসলাম (মিরপুর ক্যাম্প), ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক কর কমিশনার), স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শাহ সালাউদ্দিন, ফেনীর শফিকুল বাহার মজুমদার ও সালেহ উদ্দিন চৌধুরী এবং রংপুরের আবদুস সোবহান খান।
বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, আ ক ম মোজাম্মেল হকের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও যুদ্ধ অংশগ্রহণ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি ভারতের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫১ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকাতেও তাঁর নাম নেই বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে জামুকার একজন সদস্য উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন (মামলা নং ১৫১৪২), যেখানে সাতজনকে বিবাদী করা হয়। রিটের প্রেক্ষিতে তদন্তে উঠে আসে বিতর্কিত তথ্য, যার ভিত্তিতে সরকার এখন বিস্তারিত যাচাইয়ের পথে এগোচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: