পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিন পাওয়া ১৭৮ জন তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর সদস্যের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া তাদের জামিনের আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর আগে, গত রোববার হত্যাকাণ্ড মামলায় খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিন পান।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআরের সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তা এবং ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনাটি দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। বিদ্রোহের পর বিডিআরের নাম পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়, এবং বাহিনীর পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয়।
এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। হত্যাকাণ্ডের মামলা প্রচলিত আদালতে বিচারের জন্য আসে, তবে বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হয়। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেওয়া হয়, যেখানে ১৫২ জনকে ফাঁসি, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে, তবে মামলার কার্যক্রম মাঝপথে স্থগিত হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ড মামলায় ২০১৩ সালে রায় হলেও, বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের মুক্তি আটকে যায়।
২০১৭ সালে হাইকোর্টে হত্যা মামলার রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়, যেখানে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয় এবং ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া ২২৮ জনের পাশাপাশি ২৮৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পর ১৫ জনসহ মোট ৫৪ আসামি মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে, এই মামলার আপিল ও লিভ টু আপিলের শুনানি চলছে।
এদিকে, বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিন পাওয়া ১৭৮ বিডিআর সদস্যের মুক্তির জন্য আর কোনো আইনি বাধা নেই।
এসআর
মন্তব্য করুন: