এক্স (পূর্বতন টুইটার) তাদের নতুন ফিচারের মাধ্যমে
অ্যাকাউন্টগুলোর আনুমানিক দেশভিত্তিক অবস্থান দেখানো শুরু করেছে। এই ফিচার চালুর পর দেখা যাচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে সক্রিয়, ট্রাম্পপন্থী বহু জনপ্রিয় অ্যাকাউন্ট আসলে আমেরিকার বাইরে থেকে পরিচালিত হয়। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাখো অনুসারী থাকা এসব অ্যাকাউন্টের অনেকগুলো ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া—এমনকি বাংলাদেশ থেকেও চালানো হয়।
এ ধরনের একটি উল্লেখযোগ্য অ্যাকাউন্ট “আমেরিকা ফার্স্ট”—যার ফলোয়ার প্রায় ৬৭ হাজার। প্রোফাইল দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হয়। আবার কয়েক লাখ অনুসারী থাকা “মাগা নেশন” নামের আরেকটি অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হচ্ছে পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ থেকে।
এক্সের নতুন ফিচারে ব্যবহারকারীরা প্রোফাইলের ‘অ্যাবাউট’ অংশে গেলে অ্যাকাউন্ট কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানতে পারেন। যদিও ব্যবহারকারী চাইলে দেশ নয়, কেবল অঞ্চল দেখানোরও সুযোগ রয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে—অবস্থান তথ্য প্রদর্শিত হলেও সেগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে বিদেশি পক্ষের প্রভাব বিস্তার নতুন বিষয় নয়। রাজনৈতিক স্বার্থ, অর্থনৈতিক লাভ বা সামাজিক ইস্যুতে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে অনেকেই এসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন। তাছাড়া এক্সে এনগেজমেন্টের ওপর ভিত্তি করে আয় করা যায় বলে অনেকেই ভিউ ও অনুসারী বাড়ানোর চেষ্টা করেন। রাজনৈতিক কনটেন্ট সাধারণত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, ফলে আয়ও বেশি হওয়ার সুযোগ থাকে।
এই অ্যাকাউন্টগুলোতে নিয়মিত ট্রাম্প ও তার পরিবারসংক্রান্ত ছবি, ভিডিও, মতামত, পোলসহ নানা ধরনের পোস্ট দেওয়া হয়—যেগুলো এনগেজমেন্ট বাড়ায়। ট্রাম্প নিজেও এসব অ্যাকাউন্টের কয়েকটি পোস্ট তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে রিপোস্ট করেছেন। উদাহরণ হিসেবে “কমেন্টারি ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প” নামের আফ্রিকাভিত্তিক একটি অ্যাকাউন্টের পোস্ট তিনি শেয়ার করেছিলেন।
এক্সের পণ্য বিভাগের প্রধান নিকিতা বিয়ার জানিয়েছেন, নতুন ফিচারটি সম্পূর্ণ নির্ভুল নয়—কারণ ভিপিএন বা ভ্রমণের কারণে অবস্থান ভুল দেখাতে পারে। তবে এটি বিশ্বব্যাপী আলোচনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা বলছেন—রাজনৈতিক প্রচারণা, সামাজিক প্রভাব বিস্তার কিংবা আর্থিক লাভ—এসব কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা অনেক ব্যক্তি বা সংগঠন মার্কিন রাজনৈতিক কনটেন্ট ছড়িয়ে থাকে।
এসআর
মন্তব্য করুন: